কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানার ছুরিকাঘাতে কাপড় ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা মেহেরুল(৫০) ও স্কুল শিক্ষক বান্দা ফাত্তাহ মোহন(৫৫)দ্বয়কে হত্যার দায়ে ৪জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রবিবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত-১ এর বিচারক মো: তাজুল ইসলাম জনাকীর্ন আদালতে দন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষনা করেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়া শহরের আড়–য়াপাড়ার বাসিন্দা মৃত: ইদ্রিস আলীর ছেলে মো: তারিক প্রামানিক(৪২), মোশারফ হোসেনের ছেলে কামাল রেজা নিপু(৫২), আব্দুর রশিদের ছেলে সিরাজুল ইসলাম মাসুদ(৪২) এবং নবীর আলীর ছেলে রায়হান আলী(৪৭)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৫ আগষ্ট রাত সোয়া ৯ টায় ভেড়ামারা রেল বাজার মসজিদ সংলগ্ন মার্কেটে উপজেলার আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক ও কাপড় ব্যবসায়ী মো: মেহেরুল ইসলাম তার নিজ দোকানের আঙ্গিনায় স্কুল শিক্ষক বান্দা ফাত্তাহ মোহনসহ আরও ৬/৭জন বসে গল্প করছিলো। এসময় হঠাৎ তিনটি মটর সাইকেলযোগে ৮/৯ জনের অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদল সেখানে এসে উপর্যুপরি গুলিবর্ষন শুরু করে এবং ১০রাউন্ড গুলি বর্ষন করে পালিয়ে যায়। এঘটনায় গোটা শহরজুরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে এবং লোকজন ছুটাছুটি করতে থাকে। সংবাদ পেয়ে ভেড়ামারা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে দ্রুত গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত জখমীদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এসময় হাসপাতালের জরুরী বিভাগের প্র্থামিক চিকিৎসা চলাকালে স্কুল শিক্ষক বান্দা ফাত্তাহকে মৃত: ঘোষনা করেন চিকিৎসক। এঘটনায় গুলিবিদ্ধ ৬জনের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা মেহেরুল(৫০)এর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় দ্রুত উন্নত চিকিসার জন্যে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নৃসংশ এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত বা আহত কারো পরিবার বা আত্মীয় স্বজন থানায় মামলা করতে অনিচ্ছা পোষন করায় ১৭আগষ্ট,২০০৯ তারিখে ভেড়ামারা থানার পুলিশ উপ পরিদর্শক শেখ আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্র আইনে মামলা করেন। মামলাটি ভেড়ামারা থানার পুলিশ পরিদর্শক আজম খান তদন্ত শেষে ২০১১ সালে ২১জুলাই ১৬জনের বিরুদ্ধে হত্যার দায়ে জড়িত অভিযোগ এনে আদালতে চার্যশীট দাখিল করেন।
কুষ্টিয়া আদালতের সরকারী কৌসুলি এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী জানান, ভেড়ামার থানার চা ল্যকর গুলিবর্ষনসহ হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে দাখিলকৃত প্রতিবেদনে দীর্ঘ স্বাক্ষ্য শুনানী শেষে আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ৫জনের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীত প্রমানিত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডসহ ২৫হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত। অপর আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। তবে অভিযুক্ত সদর উপজেলার কা নপুর গ্রামের মৃত: চাদ আলীর ছেলে সিদ্দিকুল ওফরে বাংলাভাই ইতোপূর্বে আইন শৃংখলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত হন।
মামলা পরিচালনাকারী আসামীপক্ষেরর আইনজীবি এ্যাড. সুধীর কুমার শর্মা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করবেন বলে জানান।
এইচএ/কেএসসি