ইট দিয়ে বাঁধালেও সংস্কারের অভাবে ইটগুলো ধসে পড়ছে মাহবুবুর রশিদের কবরটি
আজ ভয়াল ২১ আগষ্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেহরক্ষী নিহত মাহবুবুর রশিদের শহীদের এক যুগ পুর্ণ হচ্ছে। ২০০৪ সালের আজকের এই দিনে ২১ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড বোমা ছোঁড়া হয়। সে সময় তাকে যারা রক্ষ কবচের মত নিজের জীবনকে বাজি রেখে গ্রেনেডকে প্রতিহত করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন বাঁচিয়েছিল তাদেরই একজন কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার জনাকীর্ণ নিভৃত ফুলবাড়ি গ্রামের হার“ন-অর-রশিদের কৃতি সন্তান মাহবুবুর রহমান মাসুদ। পিতা-মাতার চরম আনুগত্যময় সন্তান, দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে বেড়ে ওঠা মাহবুব ছিলেন ছেলেবেলা থেকেই শান্তশিষ্ট ও পরোপকারী। যার ফলশ্র“তিতে পরবর্তীতে নিযুক্ত হন শেখ হাসিনার ৪০ জন ব্যক্তিগত নিরাপত্তার¶ীর মধ্যে গর্বিত একজন। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্তও মাহবুব তাঁর দায়িত্ব পালন করে গেছেন একনিষ্ঠভাবে। কিন্তু শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের এতবড় অবদান রাখলেও শহীদ মাহবুবের নিষ্ঠা আর ত্যাগের কাহিনী চাপায় পড়ে থাকলো। কোন কর্মসূচীই গ্রহণ করা হয় না উপজেলা কিংবা জেলা আওয়ামীলীগ থেকে, এমনটিই অভিযোগ মাহবুবের পিতার।
প্রতি বছর ঘুরে আগষ্ট মাস আসলেই চোখের জল আর শুকায় না আমার অনেক আবেগ উৎকন্ঠা কান্না জড়িত কন্ঠে বাবা হার“ন-অর-রশিদ কথা গুলো বলছিল। ছেলে আমার নিজের জীবন দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে র¶া করেছেন। নিজের জীবন গেলেও আমার নেত্রী জীবিত আছেন এতেই আমি ধন্য। ফুলবাড়ীয়া গ্রামের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় ৪ র“ম বিশিষ্ট একটি মাত্র টিনের ঘরে ২ ভাই, ১ বোন ও বাবার বসবাস করেন। বাড়ীতে প্রবেশের কর্দামাক্ত রাস্তাটি ব্যবহার অনুপযোগী। এক যুগ মাহবুবুর রশিদ এর কবরটি ইট দিয়ে বাঁধালেও সংস্কারের অভাবে ইট গুলো ধসে পড়ছে। ঝোপ-ঝাঁপের মধ্যে বুঝার উপায় নেই এটি কার কবর। নাই কোন সাইন বোর্ড। কবরের পাশে ফুলবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। বাবার দাবী অন্তত এই বিদ্যালয়টি আমার ছেলের নামে নাম করণ করা হোক। মাহবুবুর রশিদের ২ছেলে ও স্ত্রী ঢাকাতেই থাকে। দাদুর সাথে তেমন কোন সা¶াৎ না থাকলেও বছরে অন্তত একবার বাবার কবর জিয়ারতে আসায় দেখা হয়। সরকার থেকে অনুদানের টাকা দিয়েই বিবাহযোগ্য আমার ছোট মেয়ে আবিদা সুলতানাকে নিয়ে কোনমত দিনপাত করি আমি। কুমারখালী ডিগ্রী কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্রী আমার মেয়েটি। মাহবুবের আরেক ভাই মামুন-অর-রশিদ দীর্ঘদিন বেকার থাকার পরে গতবছর কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সৈয়দ বেলাল হোসেনের হস্ত¶েপে উপজেলায় একটা চাকরি হয়। মাহবুবের স্ত্রী শামীমা আক্তার আছমা ও তার দুই ছেলে আশিক ও রবিন মায়ের সাথে ঢাকায় থাকে। প্রথম প্রথম মাহবুবের মা-বাবার সাথে যোগাযোগ রাখলেও এখন আর যোগাযোগ রাখেন না। সরকারি সুযোগ-সুবিধা তারাই ভোগ করে। আশিক কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজ এইচএসসি ও রবিন কুষ্টিয়া জেলা স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে মায়ের সাথে পাড়ি জমায় ঢাকায়।