কুষ্টিয়ার খোকসায় নিউ খোকসা হেলথ কেয়ার প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়গনষ্টিক সেন্টার নামে একটি বেসরকারী হাসপাতালের কর্মচারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাতে সিড়ি ঘরের মধ্যে তার অচেতন দেহ উদ্ধার করে খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত কর্মচারী উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের সিংঘরিয়া গ্রামের আকমল হোসেনের ছেলে হিরন(২৩)। সে পাংশা সরকারী মহাবিদ্যালয়ের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র ছিলো।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাতে সিড়ি ঘরের কলাপসিবল গেটের মধ্যে হিরনকে অচেতন অবস্থায় পরে থাকতে দেখে তাকে ক্লিনিকের কর্মচারীদের সহায়তায় খোকসা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তারা আরো জানান, হিরনকে যখন উদ্ধার করা হয় তার হাতে পোড়া ক্ষত ছিলো। বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। হিরনের মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলে এলাকাবাসী দাবী করেন।
নিহতের মা ছকিনা খাতুন বলেন , তার ছেলে সুস্থ ও মেধাবি ছাত্র ছিল। রোজা শুরুর কয়েকদিন আগে হিরন চাকরিতে যোগদান করে আর বাড়ি যায়নি। হাসপালের মালিক তাকে ঈদের দিনেও ছুটি দেয়নি। ছেলের সাথে তার ফোনে কথা হতো। সে সময়ে কম বেতনের কারণে চাকরি ছেড়ে দিতেও চেয়েছিল। সংসারের অভার আর লেখা পড়ার খরচের যোগাতে সে চাকরি ছাড়েনি। হাসপাতালে মৃত ছেলের কাছে দাঁড়িয়ে তিনি সবার কাছে একই প্রশ্ন করেন, তার ছেলের যদি স্বাভাবিক মৃত্যু হয় তাহলে তার হাতে পোড়া চিহ্ন কিসের?
এ বিষয়ে খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইদুজ্জামান বলেন, হিরনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার হাতের ক্ষত চিহ্ন দেখে মনে হয়েছে বিদ্যুত স্পৃষ্টে তার মৃত্যু হয়েছে।
নিউ খোকসা হেলথ কেয়ার প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সেলিম হোসেন বলেন, তার কর্মচারী হিরন হার্ট এ্যাটাকে মারা গেছে। তার হাতে যে পোড়ার চিহ্ন দেখা যাচ্ছে সে অনেক পুরাতন বলেও তিনি জানান। স্বাভাবিক ভাবেই হিরনের মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।