তপন দাস,নীলফামারী প্রতিনিধি
দেশে যতো বাড়ছে সড়ক তার তুলনায় তিন গুন বাড়ছে যানবাহন এর সংখ্যা । যার কারণে নষ্ট হচ্ছে সড়কের শৃঙ্খলা ।
দিক বেদিকে গাড়ি চালিয়ে যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে তুলছেন যাত্রী , মানছে না ট্রাফিক নিয়ম কানুন যার কারনে লাগছে যানজট, চলে ধীর গতিতে গাড়ি ভোগান্তিতে সাধারণ পথচারী ও যানবাহনের যাত্রী।
তাই সাধারণ পথচারী ও যানবাহনে যাত্রীদের দীর্ঘ ভোগান্তির হাত থেকে রক্ষা করতে এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বা ফিরিয়ে আনতে এবার জেলা পুলিশ নীলফামারীর পক্ষ থেকে এবার শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বসনো হয়েছে রোড ডিভাইডার ( সড়ক বিভাজন) ।
কারন সদর উপজেলা সহ জেলার ৬ উপজেলার ২০ লাখের মতো মানুষের একমাত্র শহর এই নীলফামারী ।
প্রতিনিয়ত এই শহর দিয়ে চলাচল করে লক্ষাধিক ছোট বড় সহ অসংখ্য যান বাহন এবং ৬ উপজেলার অগনিত মানুষ। যার কারনে জেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে লেগে থাকতো যানজট, যত্র তত্র থামতো গাড়ি , বিনা কারণে নেয় ইউটান।
তাই সড়কের শৃঙ্খলা ফিরাতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক গুলোতে বসানো হয় জেলা পুলিশ নীলফামারীর পক্ষ থেকে রোড় ডিভাইডার ( সড়ক বিভাজন)
যার কারণে ২০ লাখ মানুষের বসবাসের এই জেলার সড়কে যেমন ফিরছে শৃঙ্খলা ঠিক তেমনি সুফল পাচ্ছে সাধারণ পথচারীরা ও।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা থেকে জেলা শহরে আসা একজন মনোরঞ্জন দাস নামে একজন মাছ ব্যবসায়ী বলেন আমি ২ বছর থেকে এ-শহর নিয়মিত মাছ নিয়ে আসি শহরে বিক্রি করার জন্য তবে আমি সঠিক সময়ে শহরে ডুকতে পারতাম সড়কে যত্র তত্র গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতো বড় যানবাহন গুলো যেখানে সেখানে দাড়িয়ে যাত্রী তুলতো যার কারনে যানজট লাগতো , আর এখন শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক গুলোতে এই সড়ক বিভাজন বা রোড় ডিভাইডার বসানোর ফলে সড়কে এখন যানবাহনের শৃঙ্খলা ফিরছে এবং আমি ও সঠিক সময়ে শহরে ডুকে মাছ বিক্রি করতে পারছি।
শহরের কয়েকজন রিক্সা চালক এবং অটোরিকশা চালকের সাথে কথা হলে তারা জানান আমরা বহুদিন দিন থেকেই এই শহরে রিক্সা চালাই তবে আগে কিন্তু রাস্তায় কোন শৃঙ্খলা ছিলো না যেখানে সেখানে গাড়ি দাড়াতো আর আমরা ভালো করে রিক্সা ও চালাতে পারতাম না তবে এখন এই রোড ডিভাইডার গুলো দেয়ার ফলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে আর আমরাও ভালো ভাবে রিক্সা চালাতে পারছি এবং যাত্রী ও পাচ্ছি।
শহরের স্হায়ী কয়েকজন বাসিন্দা বলেন এই রোড ডিভাইডার গুলো বসানোর ফলে সড়কে যেমন শৃঙ্খলা ফিরছে তেমনি আমরাও ভালো ভাবে একটু সড়কে হাটাচলা করতে পারছি কারন আগে কোন গাড়ি কোন দিয়ে যেতো কেউ জানতো না ফলে সড়কে যেমন যানজট লাগতো ঠিক তেমনি দূর্ঘটনা ও ঘটতো প্রতি নিয়ত।
শহরের ভীতরে দীর্ঘদিন ধরে বাস চালানো বাস ড্রাইভার উত্তম কুমার দাস বলেন আমি এই শহরে দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর ধরে বাস চালাই তবে এখন যে শৃঙ্খলা টা আছে শহরে সেটা আগে ছিলো না কারন ডান দিকের গাড়ি যেতো বামে আর বামের গাড়ি যেতো ডানে বিশেষ করে শহরের চৌরঙ্গী মোড়, ডিসি অফিসের সামনে বড় বাজারে এবং গাছবাড়ির মোড়ে ফলে ঘটতো ছোট বড় দূর্ঘটনা এখন এই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক গুলোতে সড়ক বিভাজন তৈরি করার ফলে আমরা একটু শান্তিতে গাড়ি চালাতে পারছি।
এছাড়া ও শহরে ট্রাক চালানো ডুলিয়া বাজার এলাকার ট্রাক চালক শ্রী দিলীপ কুমার রায়ের সাথে কথা হলে তিনি ও একই কথা বলেন।
এদিকে চৌরঙ্গী মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে থাকা নাম না বলার শর্তে একজন ট্রাফিক পুলিশ বলেন আগে আমরা অনেক কষ্ট করে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতাম কোন গাড়ি সহজে আমাদের সীঙ্গাল মানতো না ।
চৌরঙ্গী মোড় টি চার রাস্তার মোড় হওয়ায় একদিকে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে গেলে অন্য দিকে সমস্যা শৃঙ্খলা ফেরাতে সমস্যা হতো ।
এখন এই রোড ডিভাইডার মানে সড়ক বিভাজন গুলো বসানোর ফলে সড়কে যেমন শৃঙ্খলা ফিরছে তেমনি আমরাও ভালো ভাবে একটু ট্রাফিক দায়িত্ব পালন করতে পারছি।
সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে রোড ডিভাইডার বসানোর বিষয়ে সদর থানার ট্রাফিক বিভাগের অফিসার ইনচার্জ জ্যাতিময় রায় বলেন আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই শহরের যানজট নিরসনের জন্য কি করা যায় এবিষয় গুলো নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার মহোদয় এর সাথে একাধিক বার বসেছি এবং তার দিক নির্দেশনা ও সঠিক পরামর্শ নিয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এই সড়ক বিভাজন গুলো বসানোর কাজ শুরু করি এবং যার ফলে সুফল পাচ্ছে শহরের স্কুল কলেজ , অফিস আদালত হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসা মানুষ সহ জেলার বিভিন্ন দপ্তরের মানুষ ও সাধারণ জনগন।
এদিকে এবিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার গোলাম সবুর পিপিএম এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন শহরের যানজট নিরসন এবং সড়ক দূর্ঘটনা রোধে গুরুত্বপূর্ণ স্হান গুলোতে বিভাজন বা রোড ডিভাইডার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেই মোতাবেক শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এই সড়ক বিভাজন গুলো বসানোর ফলে সড়কে যেমন যানজট মুক্ত হয়েছে তেমনি সড়ক দূর্ঘটনা ও কমে গেছে। আর সকল প্রকার যানবাহন গুলো তাদের নিজ নিজ সাইড দিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে চলাচল করতে পারছে।
সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ ভুমিকা পালন করছে জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা।