কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের পুরাতন কুষ্টিয়া গ্রামের শেফালি নামের এক ভন্ড কবিরাজের খপ্পরে পড়ে মানিক ১৮ নামের এক যুবকের আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে।
পরিবারের অভিযোগ নিহতের এক খালার রুপোর অলঙ্কার হারিয়ে যাওয়ায় ওই ভন্ড শেফালী তার অলৌকিক জাদুর শক্তিতে যুবক মানিক ইসলামকে (১৮)কে চোর হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করায় নিরপরাধ মানিক লোক চক্ষুর ভয়ে কয়েকদিন ধরে চরম মানসিক ডিপ্রেশনে ভুগছিলো।
পরিবারের লোকজনদের নানা ভাবে বিশ্বাস করাতে চেষ্টা করে যে সে কোন চুরির সাথে জড়িত নয়। অথচ কেউই ওর কথা বিশ্বাস না করায় অবশেষে মানসিক বিপর্যস্ত মানিক চিরকুট লিখে তার আত্মহত্যার কারন ব্যখ্যাসহ আত্মহত্যার প্ররোচক হিসেবে ওই ভন্ড কবিরাজকে দায়ি করে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে বলে ওই চিরকুটে মৃত্যুপূর্ব সেময়ে লিখে যায়। তবে ঘটনার পর থেকেই ওই ভন্ড কবিরাজ শেফালী পলাতক রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।এঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী কবিরাজ শেফালীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে এলাকাবাসী।
গত রবিবার ১৪ মে রাত ১১ টায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের পুরাতন কুষ্টিয়া এলাকার মোঃ শহিদুল ইসলামের ছেলে মোঃ মানিক ইসলাম (১৮) চিরকুটে লিখে আত্মহত্যা করে।
চিরকুটে মানিক লিখেন, “যদি পারো তোমরা শেফালির মতো মুখোশধারী মানুষকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দাও না হলে আমার মতো অনের নিরপরাধ মানুষের প্রাণ চলে যাবে। খালা তুমি কি বলেছো আমার মতো চোর মরে গেলে কি হয় আমি চোর নয় বিশ্বাস করো আমি চোর নয়”
এলাকাবাসী ও পরিবার সুত্রে জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই মানিক তার খালা হেফজা খাতুনের কাছে থাকতেন। মানিকের ভালো মন্দ দেখাশোনার দ্বায়িত্ব ও তিনি করতেন। মানিক বিয়ে করবে বলে খালার কাছে জানালে খালা তার ঘরের আসবাবপত্র কেনার জন্য ২০ হাজার টাকা লোন তুলে দিয়েছিন। সেই টাকা বাবা মাকে দেওয়ার কথা ও বলে গিয়েছেন মানিক তার লেখা চিরকুটে। কিছুদিন আগে মানিকের খালার ঘর থেকে ৯ ভরি রুপো/ চাঁদী চুরি হওয়ার ঘটনায় তার খালা এলাকাস্থ কবিরাজ শেফালি খাতুনের কাছে গেলে শেফালি খাতুন মানিকের নাম বলে। তারই প্রেক্ষিতে মানিক এই অপবাদ সইতে না পেরে আত্নহত্যা করেছে বলে দাবি পরিবারের।
মানিকের মা মোছাঃ আঙ্গরী খাতুন বলেন, ” আমার বোনের বাসায় ও সবসময় যাওয়া আসা করতো আমার বোন তো চুরির অপবাদ দেইনি। ওই শেফালী কবিরাজ আমার ছেলের দোষ দিয়েছে ও কবিরাজ যদি আমার ছেলের দোষ না দিতো আমার ছেলে আত্মহত্যা করে মৃত্যুর পথ বেঁছে নিতো না”।
মানিকের বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন, “ওই ভন্ড কবিরাজের জন্য আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।এমন ঘটনা যেন আর কারোর সাথে না ঘটে। আমি শেফালির বিচার চাই”।
মানিকের খালা হেফজা খাতুন বলেন, “আমি মানিককে চোরের অপবাদ দিই নি। মানিক আমার সন্তানের মতো তবে কে চুরি করেছে এটা জানার জন্য আমি কবিরাজের কাছে গিয়েছিলাম কবিরাজ মানিকের নাম বলছে মানিক নিয়েছে”।
তবে শেফালি কবিরাজের সাথে সরাসরি যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি, একাধিক বার তাকে ফোন করে ও ক্ষুদে বার্তা দিয়েও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।