খোকসা মোড়াগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষ ভাড়া নিয়ে চলছে খোকসা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম। এতে করে প্রভাব পড়ছে স্কুলের পাঠাদানে।
কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার ১ নং খোকসা ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব কমপ্লেক্স ভবন না থাকায় মোড়াগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষ ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করাতে, স্কুলে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
স্কুল ক্যামপাস এলাকার এর মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমে রিতি মতো প্রফাব ফেলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গেটের সামনে কোনো স্থায়ী/অস্থায়ী দোকান বা লোকসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের সেবা নিতে আসা মানুষের সমাগমের ফলে ওই স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে।
মোড়াগাছা ইউনিয়নের বাসিন্দা ফারুক হোসেন বলেন, পরিষদে সব সময় অনেক লোকজন আসা যাওয়া করে। যেমন গ্ৰাম্য সালিশ বৈঠক, পারিবারিক বিরোধ,জন্মনিবন্ধন সনদ সহ অনেক কাজে প্রতিদিন অনেক মানুষ এখানে আসে। এর ফলে স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমস্যা তো হচ্ছে! আমাদের চাওয়া দ্রুত ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম অন্য জায়গায় নিয়ে পরিচালিত হোক।
জানা যায়, খোকসা ইউনিয়ন পরিষদ ১৯৭৪ সাল থেকে পরিচালিত হচ্ছে। ২০০১ সাল পর্যন্ত বর্তমান যেখানে খোকসা পৌর ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে খোকসা ইউনিয়ন পরিষদ ছিল। সরকারি নির্দেশে পরিষদের জায়গা পৌর সভার কাছে হস্তান্তর করা হলে। সেই থেকে ভ্রাম্যমাণ ভাবে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আসে, ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রমের জন্য তাদের হচ্ছে মতো জায়গায় বসানো হয়। জনগণকে সামান্য সেবা পেতেও কয়েক কিলোমিটার দূর্গম পথ পাড়ি দিয়ে আস্তে হয়। পরিষদে সেবা নিতে আসা মানুষ গুলো দাঁড়িয়ে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা। সেবা প্রার্থীরা পরিষদের জায়গা স্বল্পতা কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পরিষদের মেম্বারদের বসার জায়গা পর্যন্ত না থাকায় অনেক সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানান, স্কুলের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের কারণে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদে শ’ শ’ মানুষ আসা যাওয়া করে। এতে করে পড়াশোনায় মনোযোগ হারিয়ে ফেলি। অনেক সময় অনেক মানুষের সমাগম এবং চিৎকার, চেঁচামেচিতে অনেক বিরক্ত বোধ হয়। অনেকেই আমাদের বলে, এটা স্কুল না ইউনিয়ন পরিষদ। খোকসা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ।
মোড়াগাছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান আলী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব কোন জায়গা না থাকায় মাসিক ২ হাজার টাকা ভাড়ায় স্কুলের রুমগুলো ভাড়া দেওয়া হয়েছে। আমাদের যখন প্রয়োজন তার তিন মাস আগে বলতে তারা ছেড়ে দেবে । ইউনিয়ন পরিষদের কারণে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে।
সংরক্ষিত নারী আসনের মেম্বার নামিয়া সুলতানা নিলা বলেন, ভাড়া জায়গায় বসানো হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের অফিস। এতে করে আমাদের প্রচুর সমস্যা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের ভূমি এবং ভবন জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে সবাই সহযোগিতা দরকার।
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ আবুল কাশেম জানান, ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব কোন জায়গা বা ভবন না থাকায় স্কুলের রুম গুলো ভাড়া নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের ভবন না থাকায় আমাদের ইউনিয়ন বাসীর সেবা দিতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’ তবে চেয়ারম্যান সাহেব চেষ্টা করছে ইউনিয়ন পরিষদের জায়গার জন্য।
খোকসা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস জানান, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভাড়া নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলছে এমন টা আমার জানা নেই। তবে স্কুলের রুম ভাড়া নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলছে পারে না এই বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেএসসি/পিও