কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি চেষ্টা, দফায় দফায় কুপ্রস্তাব ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন এক তরুণী। তরুণীর অভিযোগ, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার ব্যক্তিগত কিছু ছবি ফেক আইডি খুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী। অভিযোগপত্রে আরও তিন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
তারা হলেন কুষ্টিয়া শহরের পিয়ারাতলা এলাকার সোহেল রানার ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ফারদিন সৃষ্টি, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য একই এলাকার হৃদয় ও ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের ঘনিষ্ট সহচর মোহাইমিনুল মিরাজ।
অভিযোগকারী তরুণী (১৯) কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তিনি চলতি বছর কুষ্টিয়ার মিরপুর ছাতিয়ান আব্দুল বাছেত বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অনার্সে ভর্তি হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।
অভিযোগপত্রে তরুণী উল্লেখ করেন, কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জের সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করতাম। একপর্যায়ে বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাবসহ শ্লীলতাহানির চেষ্টা করায় প্রায় একমাস আগে তার কাছ থেকে সরে আসি। এরপর থেকে তিনিসহ অন্যান্য বিবাদীরা আমার সঙ্গে রাস্তাঘাটে দেখা হলে বিভিন্ন আজেবাজে কথাবার্তা বলাসহ আমাকে ফলো করতে থাকেন।
পরে একটি ফেক আইডি খুলে আমার ছবি এডিট করে বিভিন্ন আজেবাজে কথাবার্তা-সম্বলিত পোস্ট দিতে থাকেন। এ ধরনের কার্যকলাপ করতে নিষেধ করলে বিবাদীরা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, ‘ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকসহ অভিযুক্তরা আমার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছেন। আমার ব্যক্তিগত ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আমার এবং আমার পরিবারের সম্মান চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছেন। আমি তাদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জ বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। এখন পর্যন্ত তাকে এ বিষয়ে কেউ কিছু জানাননি।
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেনের অফিসিয়াল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ নিয়ে এক তরুণী প্রথমে আমার কাছে আসেন। পরে তিনি ওসি স্যারের সঙ্গে কথা বলেন।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলীয় কোনো বিষয় নিয়ে সম্ভবত তাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা হয়ে থাকতে পারে।