সাংবাদিক রুবেল হত্যা মামলায় সন্দেহজনক দুইজনকে গ্রেফতারের দাবি করেছে র্যাব-১২, সিপিসি-১ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পনী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লীডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান। শনিবার সন্ধা সোয়া ৬টায় র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের দাপ্তরিক ই-মেইল থেকে প্রেরিত মোহাম্মদ ইলিয়াস খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে র্যাবের দাবি, গ্রেফতার কুষ্টিয়া সদর উপজেলার থানাপাড়া এলাকার মৃত: আ: হামিদের ছেলে কাজী সোহান শরীফ (৪৪) এবং চরকুঠিপাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত: খন্দ: হারুন অর রশিদের ছেলে আশিকুর রহমান জুয়েল (৪০) দ্বয়কে ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্য পাওয়া গেছে যা রুবেল হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থার তদন্তকাজে সহায়ক হবে। পরে গ্রেফতার আসামীদ্বয়কে মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা পাকশী ঈশ্বরদী নৌ-পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।’
সাংবাদিক রুবেল হত্যা রহস্যের কোন কুল কিনারা করতে পারছে না আইন শৃংখলা বাহিনী,অভিযোগ পরিবারের
তবে নিহত রুবেলের পরিবারের অভিযোগ, ‘রুবেল নিঁখোজ ঘটনার শুরু থেকে মরদেহ উদ্ধার ও ময়না তদন্ত সম্পন্ন করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর এবং মামলা রুজুসহ অদ্যবধি কুষ্টিয়ার পুলিশ প্রশাসনসহ আইন শৃংখলা বাহিনী এই খুনের রহস্য উদ্ঘাটনে এখনও কোন কুল কিনারা করতে পারেনি।
নিহত রুবেল হত্যাকান্ডের অভিযোগ এনে করা মামলার বাদি নিহতের চাচা মিজানুরের অভিযোগ, ‘শনিবার র্যাব যে দুইজনকে গ্রেফতারের দাবি করেছে, তারা শুধু তথ্য দিয়েছে বলে জানাচ্ছে র্যাব; হত্যাকান্ডের দায় স্বিকার করেননি। তাছাড়া রুবেল নিঁখোজের ঘটনাস্থল কুষ্টিয়া মডেল থানা, সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছিলো সেখানে; লাশ উদ্ধার হলো কুমারখালী থানা এলাকায় মামলাও করলাম কুমারখালী থানায়। অথচ মামলার তদন্তকারী সংস্থা দেখানো হচ্ছে ঈশ^রদীর পাকশী নৌ-পুলিশ থানাকে। এর সবগুলি ঘটনার মধ্যে দিয়ে কুষ্টিয়ার পুলিশ রুবেল হত্যা কান্ডের ন্যায় বিচার নিশ্চিতে দায় নিচ্ছে না বলে অভিযোগ মামলার বাদির।
এদিকে সাংবাদিক রুবেল হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোসহ হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে কুষ্টিয়ার সর্বস্তরের সাংবাদিকবৃন্দের ব্যানারে চলমান আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ নৃসংশ এই হত্যাকান্ড ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ অতিক্রান্ত হওয়ার পরও অদ্যবাদি পুলিশ ও মামলার সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে নূন্যতম সন্তোষজনক কোন তথ্য উপস্থাপনে ব্যর্থ হওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আন্দোলনের সমন্বয়ক কুষ্টিয়া এডিটরস ফোরামের সভাপতি মজিবুল শেখ অবিলম্বে সাংবাদিক রুবেল হত্যার রহস্য উন্মোচনসহ জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি করেন। অন্যথায় আবারও লাগাতার কঠোর কর্মসূচী গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ০৩জুলাই২০২২তারিখ রাতে কুষ্টিয়া জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় কুষ্টিয়ার খবরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হাসিবুর রহমান রুবেল নিখোঁজ হন। নিখোঁজের ৫দিন পর গত ৭জুলাই২০২২ ইং দুপুর ০১:৩০ ঘটিকার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কুমারখালী পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের তেবাড়িয়া গ্রামের গোলাম কিবরিয়া ব্রিজের নিচে গড়াই নদী থেকে সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেলের অর্ধ গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে নিহত সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল এর চাচা মোঃ মিজানুর রহমান বাদী হয়ে ০৮ জুলাই ২০২২ইং তারিখ কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-১২, তারিখ-০৮-০৭-২০২২, দ:বি: ৩০২/২০১/৩৪ ধারায়। একজন সাংবাদিক হত্যা করার ঘটনাটি দেশের বহুলপ্রচারিত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হলে দেশজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।