কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুরের কথিত পল্লী চিকিৎসক দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ৬ বছর যাবত এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী তরুণী নিজেই এই অভিযোগ দিয়েছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, দ্বীন ইসলামের মূল পেশা সুদের ব্যবসা। তার কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে অনেকেই লাভ দিতে দিতে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তারপরও মূল টাকা শোধ হয়নি। টাকা ফেরত দিতে না পারায় দ্বীন ইসলাম তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করেছেন। যার মধ্যে অধিকাংশ মামলা বিজ্ঞ আদালতে চলমান রয়েছে। এখানেই শেষ নয়, তার একসময় চাউলের ব্যবসাও ছিল। ব্যবসায়ী থেকে রাতের অন্ধকারে পল্লী চিকিৎসক বনে গেছেন তিনি। নাম সর্বস্ব কুষ্টিয়া শহরের ভিশন মেডিকেল ইনস্টিটিউট থেকে ২০১৪ ইং সালে প্যারামেডিকেল পাস করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিনি একজন ভূয়া কাজীও বটে। তিনি বিয়েও দিয়ে থাকেন বলে জানা যায়। তাছাড়া এই ভূয়া কাজী ও কথিত পল্লী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ নতুন নয়। ইতিপূর্বেও তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ভুক্তভোগী তরুণী জানান, তাকে ৬ বছর ধরে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষন করেছেন কথিত পল্লী চিকিৎসক দ্বীন ইসলাম। বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় ওই কথিত পল্লী চিকিৎসক তাকে শারীরিকভাবে একাধিকবার নির্যাতনের পর গত কয়েকমাস যাবৎ তাকে প্রতিনিয়ত গুম করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া দ্বীন ইসলাম- “পরিবার মেনে নেবে না, তার বউ বাচ্চা আছে” এমন অজুহাতে তাকে এড়িয়ে চলছেন। এ কারণে বাধ্য হয়ে আবারো দ্বীন ইসলামের শিবপুর গ্রামের বাড়িতে এসে অবস্থান নিয়েছেন ওই তরুণী। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৬ বছর আগে স্থানীয় বাজারে এক মাষ্টারের কাছে প্রাইভেট পড়তে যেতেন ঐ তরুণী। সেই সুবাদে পরিচয় হয় হরিনারায়ণনুর বাজারের কথিত পল্লী চিকিৎসক দ্বীন ইসলাম (৪২) এর সঙ্গে। এরপর তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে গভীর প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ওই তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ৬ বছর যাবৎ তার সঙ্গে একাধিক স্থানে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন দ্বীন ইসলাম। দ্বীন ইসলামকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তার উপর শুরু হয় দ্বীন ইসলামের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন । ভুক্তভোগী তরুণী আরো জানান, আমার একজায়গা বিয়ে হয়েছিল কিন্তু তার বিভিন্ন চাপের কারণে আমাকে বাবার বাড়িতেই থাকতে হয়। সে আমাকে স্বামীর বাড়িতে যেতে দিতো না। তাছাড়া কথিত পল্লী চিকিৎসক দ্বীন ইসলাম তাকে বিভিন্ন দরবার শরীফে নিয়ে গিয়ে কসম কেটে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েও কথা রাখেনি। এভাবেই দীর্ঘ ছয় বছর ধরে তাদের সব ধরনের সম্পর্ক টিকিয়ে রেখে তাকে ভোগ করেছেন দ্বীন ইসলাম। এ বিষয়ে দ্বীন ইসলাম ভিন্ন ভিন্ন ভাবে তার মত জানিয়েছেন। কিছু দিন পূর্বে ভুক্তভোগী এই তরুণী বিয়ের দাবিতে তার বাড়িতে অবস্থান নিলে সে সময় দ্বীন ইসলাম জানিয়েছিলেন, মেয়েটি তার রোগী। বিভিন্ন সময় নানান রোগের চিকিৎসা নিতে তার কাছে আসতো এবং ফোনে কথা বলতো। “কথা বলা মানে তো আর ভালোবাসা না”। এখন হঠাৎ বিয়ে করতে আসছিলো। তাকে বুঝিয়ে পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন তিনি। এবার পুনরায় ওই তরুণী গত ২৯ জুন বিয়ের দাবিতে বাড়িতে অবস্থান নিলে প্রথমে তিনি বলেন, মেয়েটি মানসিক ভারসাম্যহীন। এরপর তিনি বলেন, হরিনারায়নপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কাছে তিনি মোটা অংকের টাকা পান। সেই টাকা না দিতে তাকে বিভ্রান্তিতে ফেলতে এই ফাঁদ পেতেছেন ওই শিক্ষক। এই ব্যাপারে ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজু রহমানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, এই ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।