কুষ্টিয়ায় বালু ও মাটি ব্যাবস্থাপনা আইন-২০১০ এর ৪নং ধারার ‘খ’ উপধারারর স্পষ্ট লঙ্ঘনে শত কোটি টাকা ব্যায়ে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আ লিক মহাসড়কের গড়াই নদীর উপর নির্মিত মীর মোশাররফ হোসেন সেতুসহ তৎসংলগ্ন রেলসেতুকে চরম ঝুকির মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে বালুখোরের দল। কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম এমন খেদোক্তির সাথে অভিযোগ করেন। কুষ্টিয়ার সংশ্লিষ্ট রাজস্ব বিভাগের তথ্যমতে, জেলার ২১টি বালু মহালের মধ্যে উল্লেখিত জয়নাবাদ, রাহিনীপাড়া ও ছেউড়িয়া মৌজাভুক্ত ৭১একর জমির উপরিউস্থ ৬৬লাখ টাকা সরকারী মূল্যমানের বালু মহালটি চলতি অর্থ বছরে কাউকে ইজারা দেয়া হয়নি। গড়াই নদীর উপরিউস্থ রেল ও সড়ক সেতুর নিকট্স্থ বালু মহাল থেকে যারা বালু উত্তোলন করছেন তা অবৈধ ভাবেই করছেন।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ট্রলি চালক আমিরুল বলেন, ‘প্রতিদিন এখান থেকে বেকু (এক্সাভেটর), বেলোটার দিয়ে সরাসরি ব্রিজের নীচ থেকে শত শত ড্রাম ট্রাক, ট্রলি ভরে দিচ্ছেন। প্রতি ড্রাম ট্রাক থেকে ১হাজার ৭শ এবং ছোট ট্রলি প্রতি ২শ ৫০ টাকা করে টোল নিচ্ছেন ইজারাদারের লোক।’
কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলামের অভিযোগ, “কুষ্টিয়া রাজবাড়ী আ লিক মহাসড়কের মীর মোশাররফ হোসেন সেতুর সংলগ্ন নদীর মধ্য থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সেতুটি চরম ঝুঁকি মধ্যে পড়তে পারে, এমন বিষয়টি জানিয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছি।” আমি নিজে সরেজমিন গিয়ে দেখে এসেছি সেখানে অন্তত ডজন খানেক এক্সাভেটর এবং বেলোটার (মাটিকাটা যন্ত্র) ব্যবহার করে ট্রাক ভর্তি করে দেয়া হচ্ছে। যতদুর শুনেছি সাংবাদিক রাশেদ সাহেবরা ওখান থেকে বালু উত্তোলন করছেন। আইন না মেনে অপরিকল্পিত ও অবৈধ ভাবে এই বালু উত্তোলনের ফলে শতকোটি টাকার সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হলে এঅ লের সমগ্র যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর প্রভাব পড়বে।” এভাবে বালু উত্তোলনের ফরে ইতোমধ্যে শেখ রাসেল হরিপুর কুষ্টিয়া সংযোগ সেতু চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।’
বালু মহালের ইজারা নিয়েই সেতুর ভাটি থেকে আমরা বালু তুলছি এমন কথা স্বীকার করে এসএম রাশেদ দাবি করেন, “আমাদের যেখানে দেখিয়ে দেয়া হয়েছে সেখান থেকেই বালু তুলছি। এতে সেতুর কিছু হবেনা।”
কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: সিরাজুল ইসলাম জানান, ‘জেলার মোট ২১টি বালু মহাল আছে ইজারাযোগ্য। এর মধ্যে চলতি অর্থ বছরে সবগুলি ইজারা দেয়া হয়নি। যেগুলি ইজারা দেয়া হয়েছে, এবং যারা ইজারা নিয়েছেন, তাদের আইনগত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০র বিধি অনুসরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কুষ্টিয়া রাজবাড়ী আ লিক মহাসড়কের মোশাররক হোসেন সড়ক সেতুটি জয়নাবাদ, রাহিনীপাড়া ও ছেউড়িয়া মৌজাভুক্ত ৭১একর জমির বালু মহালের মধ্যে স্থাপিত। প্রথম কথা এই বালু মহালটি চলতি অর্থ বছরে কোন ইজারা দেয়া হয়নি। সেই সাথে বিধি অনুযায়ী নদীর উপরিউস্থ সড়ক বা রেল সেতু যেখানে আছে সেখানে উজান এবং ভাটির এক হাজার মিটার বা ১কি:মি দুরত্বের মধ্যে কোন ভাবেই বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। কেউ এই আইন ভেঙ্গে বালু উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।”
সুত্রঃদৈনিক কুষ্টিয়া দর্পন,দৈনিক আজকের আলো, দৈনিক সূতপাত