কুষ্টিয়ার খাজানগরে এক ব্যক্তির বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর লুটপাটের অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগ অস্বীকার করে নিজের ক্রয়কৃত জমি দখল নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন প্রতিপক্ষ। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের খাজানগর আদর্শ পাড়া এলাকায় (১৮ মে) সকাল ১০ দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আক্তাউজ্জামান অভিযোগ করেন, নেকবার ব্যাপারী তার ভাই শুকুর আলী সহ ১২/১৫ জন লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তাদের বাধাদিতে গেলে হামলাকারীরা আক্তারুজ্জামান এর ছেলে ফাহিম (১৫) ও মেয়ে সীমা খাতুন(৩০)কে মারধর করে। পরে হামলাকারীরা তার ৩০ লাখ টাকা, দুই ভরি স্বর্ণের দুল, জমির দলিলসহ ঘরে থাকা আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায় বলে থানায় অভিযোগ করেছেন আক্তাউজ্জান।
সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান, প্রায় দু বছর পূর্বে জনৈক ফারুক পাল ও আক্তাউজ্জামান পালের কাছে থেকে আড়াই লাখ টাকা কাঠা হিসেবে প্রায় ১০ কাঠা জমি ক্রয় করেন খাজানগরের মৃত লালচাঁদ ব্যাপারীর ছেলে নেকবার বেপারী। ক্রয়ের পর জমি রেজিস্ট্রি করে দেন দুই ভাই। কিন্তু সেখানে আক্তাউজ্জামানের ঘর থাকায় তারা সময় নেন। ঘর না সড়িয়ে এরপর কেটে যায় প্রায় বছর খানেক। জমি দখল না দেয়ায় একের পর সময় নিতে থাকেন। কোন উপায় না পেয়ে এব্যাপারে স্থানীয় সমাজ প্রধান দের দ্বারস্থ হন নেকবার ব্যাপারী । দফায় দফায় সালিসি করেও কোন সুরাহা না হওয়ায় আদালতের দারস্থ হন তারা । সে মামলা চলমান।
এদিকে সমাজ প্রধান দের কাছে নেকবার ব্যাপারী এর সমাধান চাইলে এ নিয়ে আবারও সালিসি বৈঠকে বসেন সমাজ প্রধানরা। সেখানে হাজির না হয়ে বার বার সময় চান আক্তাউজ্জামান।
আজ বুধবার (১৮ মে) এ বিষয়ে আবারও সালিসি বৈঠকে বসার জন্য সময় চেয়ে নেন আক্তাউজ্জামান। কিন্ত আজ সকাল ১০ টার দিকে নেকবার ব্যাপারীর লোকজন হামলা চালায় আক্তাউজ্জামানের বসতবাড়িতে। ভাংচুর করে জমি দখলে নেন তারা।
টাকা ও স্বর্ণাংকরা লুটের অভিযোগ অস্বীকার করে নেকবার ব্যাপারী বলেন, আমরা কাউকে মারধর লুটপাট করিনি। আমার ক্রয় করা জমিতে বাড়িঘর করে দুবছর জবরদখল করে রেখেছে। বার বার সময় নেওয়ার পরও জায়গা ছেড়ে না দিয়ে উল্টো অভিযোগ করেছেন। বার বার সালিসি বৈঠক করেও সে হাজির হননি। আজ তার লোকজন শুধু জায়গা দখল নিয়েছে লুটপাট করেনি।
খাজানগর সমাজ প্রধান ও ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আজকের যে ঘটনা ঘটেছে সেটা ঘটনার পরে তিনি শুনেছেন। তবে এ বিষয়টি নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিসি বৈঠকে বসসেও আক্তাউজ্জামান হাজির হননি। যে কারনে তারা কোন সমাধান দিতে পারেননি।
বটতৈল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিন্টু ফকিরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কেউ অন্যায় কিছু করলে তার জন্য আইন আছে, সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। আইনগত ভাবে সেটা সমাধান হবে। কিন্তু নিজ হাতে আইন তুলে নিয়ে কারো বাড়ী ভাংচুর করা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করেছে, তদন্ত চলছে যেটাই হোক সেটা আইনের মাধ্যমেই সমাধান হবে। ঘটনার পর খবর পেয়ে প্রশাসনের লোকজন এসেছিলেন এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে।
স্থানীয় জগতি পুলিশ ফাড়ির আইসি এস আই মেহেদী হাসান মুন্নু জানান, ক্রয়কৃত জমি দখলকে কেন্দ্র করে খাজানগরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর পরই ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। এর পর থেকে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি সাব্বিরুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জমি দখনকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনায় একটি অভিযোগ এসেছে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।