রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সংবাদ শিরোনাম
কুষ্টিয়ায় হার্টস বাংলার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী কুষ্টিয়ার মিরপুরে ৪৪০ বস্তা অবৈধ সার জব্দ অবৈধ ফিটনেস বিহীন ট্রলির ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়ে অঙ্গহানীর শঙ্কায় -বাসার মিরপুরে স্কুলে অগ্নিসংযোগ ও প্রধান শিক্ষককে হত্যা চেষ্টা মামলায় ০৫ জন পলাতক আসামি গ্রেফতার। নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে ফায়দা হাসিলের অপতৎপরতা চালাচ্ছে: সাবেক এমপি শহীদুল ইসলাম আমি নেতৃত্ব দিয়েই কুষ্টিয়া থানা ভাঙছি’ এটা আমার আবেগী বক্তব্য -মাজেদ দৌলতপুরের ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক বহিষ্কার শিক্ষক লাঞ্ছিত হলে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘোষনা বৈষম্য বিরোধীদের চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০ আমার নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করলে পুলিশে ধরিয়ে দিন -মাজেদ
ঘোষণা:
পরিবর্তনের অঙ্গীকারে আপনাকে স্বাগতম। সময়ের বহুল প্রচারিত বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য  ভিন্নধারার নিউজ পোর্টাল "পরিবর্তনের অঙ্গীকার"। অতি অল্প দিনে পাঠক নন্দিত হয়ে উঠেছে। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের লক্ষে কাজ করছে এক ঝাঁক তরুণ, মেধাবী ও অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী। দেশ-বিদেশের সকল খবরাখবর কারেন্ট আপডেট জানাতে দেশের জেলা, উপজেলা এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সংবাদ প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে।  ছবিসহ জীবন বৃত্তান্ত (সি ভি)পাঠাতে হবে। ই-মেইল: khalidsyful@gmail.com , মোবাইল : ০১৮১৫৭১৭০৩৪

জলে জ্বলছে পৌরবাসী কুষ্টিয়ায় পানি সেবা খাতে স্বেচ্ছাচারের প্রতিকার চেয়ে আদালতে পৌরবাসী

উপদেষ্টা, হাসান আলী / ১৫৯ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম : বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ৮:২২ অপরাহ্ন

জলে জ্বলছে পৌরবাসী কুষ্টিয়ায় পানি সেবা খাতে স্বেচ্ছাচারের প্রতিকার চেয়ে আদালতে পৌরবাসী

পানির অপর নাম জীবন। তাই বেঁচে থাকার মৌল উপাদান পানি। গুরুত্ব বিবেচনায় মৌল এই সেবাটি নিশ্চিত করেন পৌর কর্তৃপক্ষ। কুষ্টিয়া পৌরসভাও এই নিয়মের বাইরে নয়। পৌর এলাকার সুপেয় পানি ব্যবস্থাপনায় এই মৌল অধিকার/সেবা নিশ্চিতে কুষ্টিয়া পৌর কর্তৃপক্ষের যে সক্ষমতা তা চাহিদার তুলনায় মাত্র ৪০ ভাগ। অথচ এই সেবাখাত হতে শতভাগ কর আদায়ে পৌর কর্তৃপক্ষের আচরণকে চরম নৈরাজ্য ও স্বেচ্ছাচারিতা আখ্যা দিয়ে এর প্রতিকার ও নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন পৌর এলাকাধীন প্রায় অর্ধশত পৌর নাগরিক। কুষ্টিয়া সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক রাশেদুর রহমানের আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে ১৫দিনের মধ্যে কুষ্টিয়া পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা তলব করেন। কুষ্টিয়া পৌরসভার পানি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগন আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দাখিলের সময় প্রার্থন করেন। আদালত পৌর কর্তৃপক্ষের আবেদনটি আমলে নিয়ে আগামী ২০এপ্রিল সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দাখিলের আদেশ দিয়েছেন।
এমামলার বাদী পক্ষের প্রতিনিধিত্ব করছেন মো: নওশের আলী দিং এবং বিবাদী করা হয়েছে কুষ্টিয়া পৌসভার মেয়র, নির্বাহী প্রকৌশল, সচিব, সহকারী প্রকৌশলী (পানি) এবং মোকাবিলা বিবাদি করা হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসককে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, এজাহারকারীগণ কুষ্টিয়া পৌরসভা কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে ইস্যুকৃত বে-আইনী, ভুয়া, বেদারা, অকার্য্যকর, উদ্দেশ্য প্রনোদিত হীন স্বার্থ চরিতার্থে এখতিয়ার বর্হির্ভুত ও পৌর নাগরিকদের উপর বাধ্যকর নহে এমন প্রায় দেড় শতাধিক স্মারক নংসহ সীল মোহরযুক্ত নোটিশের কপি সংযোজন করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে- কুষ্টিয়া পৌরভা নাগরিকদের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহে সক্ষমতা বহির্ভুত এলাকার মানুষ জীবন ধারনের জন্য নিজ নিজ উদ্যোগে টিউবয়েল, সাবমার্চেবল বোরিং করে বাসাবাড়িতে পরিবার পরিজনের নিত্য এই পানি সংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। অথচ কুষ্টিয়া পৌরসভার পানি বিভাগের লোক দাবি করে প্রতিদিন প্রতি নিয়ত বিভিন্ন জন এসে নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে পানির বোরিং বন্ধ করে অথবা অপসারণ করে নেয়ার হুমকি দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করে আসছে। কখনওবা পৌরসভার সিল মোহরযুক্ত নোটিশ এনে হাতে ধরিয়ে দিয় পানি বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে টাকা নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত এমন অন্যায় ও অবৈধ টাকা আদায়ের মাধ্যমে চরমভাবে তীক্ততার সৃষ্টিসহ বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে পৌর নাগরিক সমাজকে। পৌর কর্তৃপক্ষের এই অন্যায় স্বেচ্ছারিতার বিরুদ্ধে বিচারিক প্রতিকারসহ নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন মামলার বিবাদীগণ।

কুষ্টিয়া উপজেলা সড়কের বাসিন্দা জান্নাতুল ফেরদৌসের অভিযোগ, “দেখুন ‘ভাত দেয়ার ভাতার না কিল মারার গোসাই’য়ের মতো আচরণ করছেন কুষ্টিয়া পৌরসভা। সোজা কথা, আপনি আমাকে সেবা দিবেন, আমার কাছ থেকে সেবা কর নিবেন। পানি দিবেন না তো অন্যায় ভাবে জুলুম করে আমাদের কাছ থেকে টাকা নিবেন কেন ? পাবনা পৌরসভার কলেজ পাড়ার বাসিন্দা আমার বড়ভাই মেজবা উদ্দিন এবং ঝিনাইদাহ আরাপপুর মোড়ের বাসিন্দা আমার ননদের বাড়িতে এধরণের পানি সেবা খাতে কোন টাকা নেন না পৌর কর্তৃপক্ষ। সেজন্য আমরা বাধ্য হয়ে প্রতিকার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি”।

কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, “৪২ দশমিক ৭৯বর্গ কি:মি আয়তনে বসবাসকারী প্রায় ৮৬হাজার পরিবার ও প্রায় আড়াই লক্ষ জনসংখ্যা অধ্যুষিত পৌর এলাকার মোট হোল্ডিং সংখ্যা ৩৬হাজার ৩শ ২টি। এসব হোল্ডিংধারী নাগরিকদের পানি সরবরাহে পৌরসভার সক্ষমতা রয়েছে চাহিদার তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ। প্রতিদিন ১০হাজার ৪শ ঘনমিটার পানি উৎপাদন ও সরবরাহ সক্ষমতার মাধ্যমে ১০হাজার ৬শ ৫৩টি পানি সংযোগ গ্রহীতাদের পানি সেবা দিতে পারেন কুষ্টিয়া পৌরসভা”। এছাড়াও ৩হাজার ৫শটি হস্তচালিত চাপ কল, ১হাজার ৩শ ৬৫টি সাবসার্চেবল মটর এবং জেড টাইপ মটর (চাপকল বোরিংএ সাথে সংযুক্ত) ২৮৯টি অনুমোদন দিয়েছে কুষ্টিয়া পৌরসভা। তবে বাস্তবে ধারণা করা হচ্ছে যে পৌরসভা কর্তৃক অনুমোদন ছাড়া আরও অন্তত সহ¯্রাধিক সাবমার্চেবল এবং জেড পাম্প রয়েছে যা পৌরসভার সেবাকরের তালিকা বহির্ভুত। তবে পৌর বিধি মতে কুষ্টিয়া পৌর এলাকার যেখানেই বসবাস করেন না কেন অবশ্যই পানি সেবা কর দিতে বাধ্য বলে দাবি করলেন এই নির্বাহী প্রকৌশলী।

কুষ্টিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের পরিচালক ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম কাদরী শাকিল বলেন, ‘পৌসভার সর্বমোট হোল্ডিং সংখ্যা প্রায় ৩৬ হাজার। এরমধ্যে মাত্র দশ হাজার হোল্ডিংধারীদের পানি সংযোগ দিতে পারে কুষ্টিয়া পৌরসভা। বাকিরা নিজ নিজ উদ্যোগে হস্তচালিত চাপকল, জেডপাম্প টিউবয়েল এবং বিভিন্ন সাইজের সাব মার্চেবল স্থাপন করে পানির চাহিদা পুরণ করছেন। এজন্য পৌরসভাকে দিতে হচ্ছে সাড়ে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৮৭হাজার টাকা ক্ষেত্র বিশেষে তারও বেশী টাকা আদায় করছেন পৌরসভা। এছাড়াও ওইসব হোল্ডিংধারীদের কাছ থেকে মাসিক পানি কর আদায় করছেন। হিসেব মতে এখাত থেকে কোটি কোটি টাকা আদায় করলেও পানি সেবা খাতের উন্নয়নে ওই টাকা ব্যবহারের তেমন কোন দৃষ্টান্তও নেই কুষ্টিয়া পৌরসভার কাছে।

সংক্ষুব্ধ নাগরিকদের এলাকা কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মীর রেজাউল ইসলাম বাবু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “আমাদের পৌরসভার পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা এখনও পর্যন্ত চাহিদার তুলনায় একেবারেই সামান্য। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে আমার এলাকার জনগণ পানির দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েন। এনিয়ে অনেকবার পৌর পরিষদে বিষয়টি উত্থাপন করেছি। ব্যবস্থা গ্রহনের আশ^াসও দিয়েছেন মেয়র। সেবা না দিয়ে ওই খাত থেকে টাকা আদায়ের বিষয়ে অনেকেই বিক্ষুব্ধ পোষন করে অভিযোগ করেছেন। পৌর বিধি অনুযায়ী এই পানি ট্যাক্স আদায় করে পৌর কর্তৃপক্ষ”। দেখুন আপনারা যা কিছুই জানতে চান দয়া করে মেয়রের সাথে কথা বলেন, উনি ভালো বলতে পারবেন।

এবিষয়ে কথা বলতে কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী বলেন, “কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় নাগরিক সেবার গুরুত্বপূর্ন খাত হলো পানি সরবরাহ। দীর্ঘদিন ধরেই এখানে চাহিদার তুলনায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় সক্ষমতার ঘাটতি আছে। ঘাটতি পূরনে ইতোমধ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন এলাকায় সাবমার্চেবল বোরিং স্থাপনসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাতে শুষ্ক মৌসুমে শতভাগ না হলেও একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পরিবারের পানির যোগান দেয়া সম্ভব হবে।

কুষ্টিয়া স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মৃনাল কান্তি দে বলেন, “স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে পৌরসভা একটি স্বয়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। স্থান কাল বাস্তবতায় উন্নয়ন ও নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে পৌর পরিষদের কিছু এখতিয়ার আছে; তবে এখতিয়ার বা ক্ষমতা যাই থাক না কেন সেটা কোন ভাবেই জনস্বার্থ বিরেধী হবে না। তেমন কোন ঘটনায় কেউ সংক্ষুব্ধ হলে অবশ্যই তারা প্রতিকার চাইতে পারেন”।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর