বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী কক্সবাজারকে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্মাণাধীন সবচেয়ে বড় রানওয়ের কাজ শেষ হলে কক্সবাজার বিমানবন্দর প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে যাতায়াতকারী আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জ্বালানি সরবরাহ কেন্দ্রে পরিণত হবে বলেও মনে করেন সরকারপ্রধান। রবিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী জানান, কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে তার সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে সেখানে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সবচেয়ে বড় রানওয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি জানান, কক্সবাজার পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারে সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেখানে বিদেশিদের জন্য আলাদা জোন গড়ে তোলা হবে। তারা সেখানে তাদের মতো করে উপভোগ করতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পছন্দের জায়গা ছিল কক্সবাজার। তিনি বেশি সময় জেলেই থাকতেন। জেল থেকে বের হয়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কক্সবাজার ছুটে যেতেন। সে সময় বাবার সঙ্গে কক্সবাজারের নানা জায়গায় ঘোরাঘুরির স্মৃতিচারণ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
শেখ হাসিনা জানান, আওয়ামী লীগ ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে যে ইশতেহার ঘোষণা করেছিল সেই অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে। এখন যত উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে সবই তাদের দলীয় ইশতেহারে ছিল।
এ সময় তিনি বিগত সরকারগুলোর সমালোচনা করেন। তিনি জানান, ১৯৯৬ সালের আগে ২১ বছর দেশে সত্যিকারের কোনো উন্নতি হয়নি। জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া কেউই দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করতেন না, এজন্য তখন দেশের উন্নতি হয়নি বলেও মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকায় সেটা কাজে লাগিয়ে দেশকে গড়ে তোলা হচ্ছে। ভবিষ্যতে দেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।
সমুদ্র তীরবর্তী জমি পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ করে সরকার কক্সবাজার বিমানবন্দরের আরও উন্নয়ন ঘটানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আন্তর্জাতিক বিমান কোম্পানিগুলো তাদের বড় বড় বিমানকেও এই বিমানবন্দরে যাতে অবতরণ করাতে পারে সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে নতুন ১০ হাজার ৭০০ ফুট রানওয়ে হবে- যার ফলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের বোইং ৭৭৭ ও ৭৪ এর মতো বড় আকারের বিমানগুলো এই বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারবে এবং এর ফলে এখানে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করার পথ সুগম হবে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী এবং সিভিল অ্যাভিয়েশন অথোরিটি অব বাংলাদেশ (সিএএবি)’র চেয়ারম্যান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।