বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে এর সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে। আজ রোববার (৪ জুলাই) দুপুরে ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি। গতকাল শনিবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর বিষয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তার নিন্দা জানানো হয়েছে বলেও জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আইনের কোথাও একথা বলা নেই যে সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে পারবেন না। যেখানে খুনের মামলায়, ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামি অথবা আজীবন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুক্তি নিয়ে বিদেশে চলে যেতে পারে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সেখানে এদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য যিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে মানবিক কারণে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া যাবে না, এটা কোনো মতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
খালেদা জিয়ার মামলা তো এখন উচ্চ আদালতে চলমান আছে, তিনি এখন তার মামলা থেকে জামিন বা সাজা থেকে রেহায়ও চাচ্ছেন না। তাহলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকারের যে ক্ষমতা, সেটা অনুযায়ী তাকে বিদেশে পাঠাতে গিয়ে কি নিজেরাই নিজেদের ক্ষমতা খর্ব করছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, হ্যাঁ, এই কথাটা আমরা এর আগেও বলেছি। আমাদের আইনজীবীরাও এর উত্তর দিয়েছেন।
তিনি বলেন, সরকার যে আইনের ক্ষমতাবলে এই নির্দেশ (খালেদা জিয়া মুক্তি দিয়েছে) দিয়েছেন, সেই আইনে তারা নতুন নির্দেশে দিয়ে তার (খালেদা জিয়া) বিদেশের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেন। আপনি সঠিক বলেছেন। তারা আসলে নিজেরাই নিজেদের ক্ষমতা খর্ব করছেন। এটার একমাত্র উদ্দেশ্য খালেদা জিয়ার সঙ্গে একটা বৈরী মনোভাব প্রর্দশন করা। প্রতিহিংসামূলকভাবে তারা (সরকার) এই ব্যবস্থা করছে। সংসদে খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল সংসদে সংসদ নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার বক্তব্য অনভিপ্রেত এবং রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত। তার মনগড়া কল্পকাহিনীর মধ্যে দিয়ে একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা, গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রীকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছেন।
করোনা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য এই অযোগ্য সরকারের অযোগ্যতা, দুর্নীতি এবং উদাসীনতা দায়ী। প্রায় ১৫ মাস সময় নিয়েও সমস্যাগুলো সমাধান করতে না পারার ব্যর্থতা নিয়ে সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। অবিলম্বে দিন আনে দিন খায়, অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, দোকান শ্রমিক, হকার, প্রান্তিক কৃষকদের জন্য এককালীন ১৫ হাজার টাকা প্রদানের আহবান জানান তিনি।