ন্যায় বিচার না পাওয়ার অভিযোগ তুলে কুষ্টিয়া আদালত চত্ত্বরে অনশন করছেন এক নারী। ঐ নারীর ভাষ্যমতে, আমি আর নির্যাতন সইতে পারছি না। স্বামীর সংসারে নির্যাতিত হয়ে ফিরে এসেছি। এখন বাবা-মার সংসারে নানান কথা শুনতে হচ্ছে। আদালতে ঘুরতে হচ্ছে। আমি আজকে যদি আমার জিনিষপত্র ফেরত না পায় তাহলে এই আদালত চত্ত্বরেই আমি আত্মহত্যা করবো।
রোববার (০৮ অক্টোবর) দুপুর ১২ টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ কোর্ট চত্ত্বরে এ অনশন শুরু করেন ভেড়ামারা উপজেলার ফকিরাবাদ এলাকার রতœা খাতুন (২৮) নামের এক নারী।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ভেড়ামারা আমলী আদলতে দায়ের করা অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর ভেড়ামারা সিআর ২৩৫ নং মামলায় বাদী রতœা খাতুন তার স্বামী আব্দুল্লাহ হোসেন বিপ্লব এর বিরুদ্ধে ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে নির্যাতনের অভিযোগ করে। সেই সাথে শশুর, শাশুড়িসহ ৫জনকে আসামী করেন তিনি।
এ মামলায় ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়ার সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত “ঘ” অঞ্চল মাহমুদা সুলতানা মামলাটি দো-তরফা শুনানী শেষে খারিজ করেন।
এরপর উচ্চ আদালতে গেলে উচ্চ আদালত গত ০২ অক্টোবর মামলাটি খারিজ করেন।
এদিকে আদালতে ন্যায্য বিচার পাননি এমন অভিযোগ করে রোববার (০৮ অক্টোবর) কুষ্টিয়া আদালত চত্ত্বরে অনশন এবং আত্মহত্যার হুমকি দেন ঐ নারী।
আদালত চত্ত্বরে ঐ নারী জানান, বিয়ের পর থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালোঙ্কার, আসবাবপত্র আমি স্বামীর বাড়ীতে নিয়ে গেছি। কিন্তু তারপরেও তারা আরো টাকা চাই। ১ লাখ টাকা মোটরসাইকেল কেনা বাবদ ব্যাংকের মাধ্যমে দেয়। তারপরেও আমাকে শারিরিক ও মানষিক ভাবে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আমার স্বামী ও শশুর বাড়ীর লোকজন। এরপর আমাকে ২৯/০৯/২০২১ তারিখে তালাক প্রদান করেন। কিন্তু আমি আমার ন্যায্য পিতা-মাতার দেওয়া জিনিষপত্র ফেরত চাইলে তারা দেয়না। এ ব্যপারে আদালতে গিয়েও কোন লাভ হয়নি। আমি কোনপ্রকার জিনিষপত্র ফেরত পায়নি।
আমি এমন এক নারী যে স্বামীর বাড়ীতে সংসার করতে পারিনি, এখন বাবার বাড়িতেও থাকতে পারছি না। আমি আমার পিতা-মাতার দেওয়া জিনিষপত্র, টাকা ফেরত চাই। না পেলে এই আদালত চত্ত্বরেই আমি গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করবো।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী বলেন, কেউ যদি মনে করেন তিনি ন্যায্য বিচার পাননি। তাহলে তিনি অবশ্যই উচ্চ আদালতে যেতেই পারেন। আজ আদালত চত্বরে কেউ অনশন করেছেন এটি আমার জানা নেই।