কুষ্টিয়া মডেল থানার তরলদাহ্য ছুড়ে অন্ত:সত্বা গৃহবধু হত্যার দায়ে রোকনুজ্জামান ওরফে রনি (৩৮)র মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহষ্পতিবার বিকেলে কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালেন বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম দন্ডপ্রাপ্ত যুবকের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষনা করেন। রায়ে সাজাপ্রাপ্ত যুবককে আরও ৫০হাজার টাকা জরিমানারও আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সাজাপ্রাপ্ত ওই যুবক হলেন- কুষ্টিয়া শহরের কমলাপুর এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য ফজলুল হকের মাদকাসক্ত ছেলে রোকনুজ্জামান ওরফে রনি(৩৮)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২১ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টায় ভাড়াটিয়া অন্ত:সত্বা গৃহবধু জুলেখা খাতুন(৩৫) বাড়ির মালিক হামিদা খাতুনের সাথে তার দোতলায় বসে গল্প করছিলেন। এসময় ইন্টারনেট সংযোগের পাসওয়ার্ড দেয়া নেয়াকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে সৃষ্ট দ্বন্দের জেড়ে বাড়ি মালিকের ছেলে রোকনুজ্জামান পেট্টোল, তারপিনসহ অতিদাহ্য মিশ্রিত তরল ছুড়ে গ্যাস লাইটের আগুন ধরিয়ে দেয়া গৃহবধু জুলেখার দেহে। এঘটনায় নিহতের শরীরের ৭০শতাংশ অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। দগ্ধ জুলেখাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রয়োজনীয় ও উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। পরে অগ্নিদগ্ধ জুলেখা ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে। এঘটনায় নিহতের স্বামী মিরপুর উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের বাসিন্দা পোল্ট্রি ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান আসামী রোকনুজ্জামান রনির বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ এনে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ০৩ জুন কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক জাবিদ হাসান এ মামলার একমাত্র আসামী রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে একসাথে দুইটি নরহত্যাকান্ডে জড়িত অভিযোগে চার্যশীট দাখিল করেন আদালতে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতের সরকারী কৌসুলি এ্যাড. আব্দুল হালিম জানান, নিহত গৃহবধুর বাসায় ব্যবহৃত ইন্টারনেট সংযোগের পার্সওয়ার্ড নেয়াদেয়াকে কেন্দ্র করে পূর্ব হতেই যুুবক রোকনুজ্জামানের সাথে দ্বন্দ চলছিলো। তারই জেরে এই হত্যাকান্ডে জড়িত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমানিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত মামলার একমাত্র আসামী রনির মৃত্যুদন্ডসহ ৫০হাজার টাকা জরিমানাদেশ দিয়েছেন।
Post Views: 125