কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর বালিয়াপাড়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ বানিজ্য ও গোহাট দখলের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দ্বন্দের জেড়ে ফিরোজ মোল্লা(৩২) নামে এক যুবক হত্যার দায়ে দুই জনের মৃত্যু ও চারজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহষ্পতিবার বিকেলে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত-১ এর বিচারক মোঃ তাজুল ইসলাম দন্ডপ্রাপ্ত ৫ ব্যাক্তি উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষনা করেন। রায়ে সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেকের পৃথক ভাবে ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত। তবে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীর অর্থ আদায়ে তার স্থাবর অস্থাবর সম্পদ নিলাম করত জরিমানার অর্থ আদায়ের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে পলাতক আসামী জমির উদ্দিনকে গ্রেফতারেরও আদেশ দেয়া হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন ইবি থানাধীন মৃত্তিকাপাড়া গ্রামের আদিল উদ্দিনের ছেলে সজিব বিশ্বাস (৩৫) মৃত্যুদন্ড, বারিয়াপাড়া গ্রামের মৃত জানে আলী জানু ওরফে জান আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম(৪২)মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্তরা হলেন- করিমপুর গ্রামের মৃত ওয়াহেদ জোয়ার্দ্দারের ছেলে জমির উদ্দিন জোয়ার্দ্দার (৪৬) (পলাতক), মকছেদ আলী মন্ডলের ছেলে সদর উদ্দিন মন্ডল(৬০), আব্দুল আজিজ ওরফে আজিত এর ছেলে আনিছুর রহমান ওরফে আনিস(৩৮), এবং বালিয়াপাড়া গ্রামের দিদার আলীর ছেলে সুমন আলী ওরফে সুমন(৩৫)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ০১ জানুয়ারীতে দিবাগত রাতে যেকোন সময় মৃত ফিরোজ মোল্লাকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে তাকে জবাই করে হত্যা শেষে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে একটি প্লাস্টিকের বাজার করা ব্যাগের মধ্যে রেখে আলামপুর বালিয়াপাড়া উ্চচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুই নাম্বার গেটে ঝুলাইয়া রাখে এবং মস্তকবিহীন দেহটি বালিয়াপাড়া গ্রামের বাবলা তলা মাঠের সরিষা ক্ষেতে ফেলে রেখে খুনিরা পালিয়ে যায়। এঘটনায় নিহতের পরিবার লাশের সনাক্ত করলেও হত্যার অভিযোগ এনে পরিবারের পক্ষ কেউ মামলা করতে রাজি না হওয়ায় ঘটনার তিন পর কুষ্টিয়া মডেল থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি অজ্ঞাতদেও বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে র্যাব-১২, সিপিসি-১ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের সহকারী পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম ২০১৭ সালের ০১ এপ্রিল চার্যশীট দাখিল করেন আদালতে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারী কৌসুলি এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী জানান, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রæতার জেড়ে সংঘটিত চা ল্যকর হত্যাকান্ডের অভিযোগের স্বাক্ষ্য শুনানী শেষে সাজাপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমানিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত দুইজনের মৃত্যুদন্ড ও ৪জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডসহ অর্থদন্ডাদেশ দিয়েছেন।