চারটি ছোট ছোট খুঁটি। তাতে লাল নাইলনের দড়ি দিয়ে সীমানা টেনে দেওয়া। ভেতরে মাদুর বিছিয়ে পড়াশোনায় ব্যস্ত কিছু শিশুর দল। বলছি পথশিশুদের বন্ধু কুষ্টিয়র ছেলে রনক মাহমুদ জনির ভালোবাসার গল্প। ঢাকা শ্যামলীর পার্ক মাঠে বিকেলেই দেখা মিলবে এদের। স্কুলের সরঞ্জাম বলতে বসার জন্য মাদুর, আদর্শলিপি বই, খাতা, কলম-পেনসিল, সাদা বোর্ড ও একটি মার্কার। খোলা আকাশের নিচেই চলে পড়াশোনা।
সপ্তাহে শুক্র, রবি ও মঙ্গলবার বিকেলে দুই ঘণ্টা এ স্কুল চলে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের বয়স ৮ থেকে ১২ বছর। প্রায় সবাই কাজ করে খাওয়া শিশু। তাই অনেকেই নিয়মিত না। রবিন প্রতিদিন মায়ের সঙ্গে বোতল কুড়ায়। বিকেলে পড়তে চলে আসে। রবিনের সহপাঠী মনুর ইচ্ছা ইঞ্জিনিয়ার হবে।
‘গাড়ি-গুড়ি ঠিক করার ইঞ্জিনিয়ার ।’শিশুদের মনোযোগ ধরে রাখার জন্য প্রতিদিনই হালকা কিছু খাবার দেওয়া হয় এখানে। এ ছাড়া বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতাও হয়। পড়ার পাশাপাশি শেখানো হয় সুন্দর করে কথা বলা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়। শিশুদের জন্য সবসময় যার মোন কাদে সেই পথশিশুদের বন্ধু রনক মাহমুদ (জনি) বলেন, স্কুলটি চলে স্বেচ্ছাসেবক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাহায্যে। তাঁদের লক্ষ্য এখান থেকে প্রথমে এদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা দিয়ে পরে এদের কারিগরি শিক্ষা দিয়ে স্বনির্ভর করে গড়ে তুলবেন।
কোনো স্কুলে ওদের ভর্তি করানো। সুবিধাবঞ্চিত এ শিশুরা যেন সমাজের শিক্ষিত মানুষের কাতারে আসতে পারে। পথশিশুদের ছায়াতল স্কুলটি পার্কের একটি আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।