কুষ্টিয়া জেলার বিবিন্ন অঞ্চল থেকে ৫ শতাধিক গ্রাহকের ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সান রাইজ বিজনেস সার্ভিসেস লি: বা এসবিএসএল নামক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ৩জনসহ প্রতারণা চক্রের ৮সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১২।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় র্যাব-১২ সিপিসি-১ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘দেশের তৃণমূল পর্যায়ের সরল সোজা সাধারণ নারী পুরুষদের স্বল্প বিনিয়োগে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং বিজনেসে সম্পৃক্ত করার শর্তে প্রতি গ্রাহকের নিকট থেকে বিভিন্ন পরিমান টাকা সংগ্রহ করে। প্রথম দিকে কিছু সংখ্যক গ্রাহকের সুযোগ সুবিধা দিয়ে অন্য সকল গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়। এভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে এই কোম্পানীর শীর্ষ ব্যক্তিরা গা ঢাকা দেয়। এতে হতাশ হয়ে পড়ে গ্রাহকরা। এর মধ্যে কুষ্টিয়ার মিরপুর থানা ও কুমারখালী থানায় কিছু সংখ্যক গ্রাহক প্রতারণার অভিযোগ এনে একাধিক মামলা করেন। ওইসব মামলার এজাহার নামীয় আসামীদের গ্রেফতারে র্যাব-১২র অভিযানিক দল জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ৫জন এবং এদের স্বীকারোক্তি মতে ঢাকার মিরপুর থেকে কোম্পানীর শীর্ষস্থানীয় আরও ৩জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- কুমারখালী উপজেলার বেতবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা জলিল বিশ^াসের ছেলে হাসান আলী(২৮), মহেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত: আমজাদ হোসেনের ছেলে আব্দুল হান্নান(৪৩), ওয়াশী গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে মো: মোস্তফা রাশেদ পান্না(৪৭), বাঁশগ্রামের মৃত: আলাউদ্দিন বিশ^াসের ছেলে আইয়ুব আলী(২৮), বহলবাড়িয়া গ্রামের মৃত: আলতাফ হোসেনের ছেলে মো: হাফিজুর রহমান(২৮)।
অভিযানের প্রথমে গ্রেফতার এই ৫জনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় শৈলকুপা উপজেলার চরআওশিয়া গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে এসবিএসএলের চেয়ারম্যান মো: সাজ্জাদ হোসেন(২৯), ঝিনাইদাহের মহেষপুর থানার আব্দুল গফুরের ছেলে এসবিএসএলর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মহসীন আলী(৩১) এবং কুমারখালীর গোবরা গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে ফিন্যান্স ডাইরেক্টর মো: ইমরান হোসেন(২৮)। গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের দায়ে কুমারখালী থানায় দায়ের হওয়া প্রতারনা মামলার এজাহার নামীয় এবং র্যাবের অভিযানে গ্রেফতার এসবিএসএল কোম্পানীর শীর্ষ এই তিন ব্যক্তি কুষ্টিয়া ইসমলামী বিশ্ববিদ্যালয় হতে আল কোরআন ও ফিকাহ শাস্ত্রে অনার্স মাষ্টার্স শেষ করে কুমারখালী ও শৈলকুপা উপজেলার বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তৃণমূল পর্যায়ের সাধারণ গ্রাহকদের কাছে হুজুর হিসেবে পরিচিত হওয়ায় খুব সহজেই তারা প্রতারনা করে গ্রাহকদের থেকে সংগৃহীত টাকা আত্মাসাত করতে সক্ষম হয়েছিলো বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা।
গ্রেফতার আয়ুব আলীর বড় ভাই মিজানুর রহমান জানান, ‘গত বৃহষ্পতিবার রাত ১টাকার সময় সাদাপোষাক পরা প্রশাসনের লোক বাড়ি থেকে মাদ্রাসা শিক্ষক আয়ুব আলীকে তুলে নিয়ে আসে। পরে সংবাদ পায় উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আরও ৪জনকে তুলে নিয়ে এসেছেন। আমার জানামতে আয়ুব আলীর বিরুদ্ধে ্ইতোপূর্বে কোন মামলা হয়নি।’
তবে পরিবারের এই দাবি ও অভিযোগ সম্পূর্ন নাকচ করে দিয়েছেন র্যাব-১২ সিপিসি-১ এর কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লীডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান। তিনি বলেন, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের দায়ে একাধিক সুনির্দিষ্ট মামলা আছে কুমারখালী ও মিরপুর থানায়।