কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৫নং ওয়ার্ডে অবস্থিত জুগিয়ার বালিঘাট একসময় ছিল অত্র এলাকাবাসীর জন্য গলার কাঁটা। যখন সরকারীভাবে ইজারা বন্ধের ঘোষণা করা হয় তখন এলাকাতে একপ্রকার সস্তির আশ্বাস মিলেছিল তাদের। দীর্ঘদিনের এই ধ্বংস চক্রের হাত থেকে এলাকাটি রক্ষা পাওয়ায় মানুষ তাদের কষ্টের দিনগুলির কথা ভুলতে বসেছিল। কিন্তু বেশ কিছুদিন যাবৎ রাতের আঁধারে কে বা কাহারা ট্রলি দিয়ে বালি কেঁটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে হুমকীতে রয়েছে স্থানীয়রা।
যখন বালির ঘাট স্বচল ছিল সেই সময় থেকে এলাকার রাস্থা ঘাট বিধ্বংসীত আজও সংস্কার হয়নি। সামান্য বৃষ্টিপাতে চলাচলে জরাজীর্ণ অবস্থা হলেও মানুষ মেনে নিতে পেরেছে। নতুন করে সপ্ন দেখতে শুরু করেছে ঘড় বাড়ি নির্মানের দিকে। যেখানে আগে কোন আত্বীয় স্বজনেরা এলাকাতে যেতেই চাইতো না সেখানে অন্য এলাকার মানুষ অবকাঠানো তৈরির জন্য যায়গা খুঁজে বেরাচ্ছে। হয়তো রাস্তাটি সংস্কার হলে আধুনিক একটি বাসযোগ্য স্থান হবে ঐ এলাকাটি। এরি মধ্যে নতুন করে শত শত ট্রলি দিয়ে রাতের আঁধারে বালি কাঁটায় এলাকাবাসীদের ভাবিয়ে তুলেছে। সুত্রে জানা যায়, রাত যত গভীর হয় ততই বালি কাঁটার হিড়িক পরে এই বালির ঘাটে। ঐ বালির ঘাটে চলাচলের জন্য দুইটি রাস্তা ব্যবহার হয় একটি ঘাট হতে কানাবিল মোড় সড়ক আরেকটি বালিঘাট হতে হাটপাড়া দিয়ে ত্রিমহোনী সড়ক। তবে ত্রিমহোনী সড়কের রাস্তা থেকে পাথরগাদী ও মাদ্রাসা মোড়েও উঠা যায়। মূলত রাতে হাটপাড়ার ঐ সড়কটি ব্যবহার করেই বর্তমানে বালি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে এলাকা সূত্রে উঠে এসছে। সন্ধার পরে তেমন থেমে থেমে কাটলেও রাত ৩টা থেকে শুরু করে সকাল পর্যন্ত দলে দলে ট্রলির হিড়িক পরে বালির ঘাটে। শত শত ট্রলির শব্দে এলাকা জুড়ে মানুষের ঘুম যেন হারাম হচ্ছে। কে বা কাহাদের সহযোগীতায় বালি কাঁটা হচ্ছে তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না কেউই। তবে এর পিছনে যেই থাকুক না কেনো আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এই বিষয়ে এডিসি রেভিনিউ মোঃ সিরাজুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, যে সমস্থ বালিরঘাট ইজারা বহির্ভূত সে সমস্থ যায়গায় যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে বালি উত্তলোন করে থাকে তাদের বিষয়ে খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই বিষয়ে আমাদের মোবাইল টিম ততপর রয়েছে বলে জানান তিনি।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাধন কুমার বিশ্বাসের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এর আগে এমন অভিযোগের ভিত্তিত্বে দিনের বেলাতে আমরা সদর এসিল্যন্ডের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করেছি। তবে আবার যদি এমনটি হয়ে থাকে আমরা সুনির্দিষ্টি অভিযোগ পেলে দিন বা রাত হোক না কেন আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে আইন আনুক ব্যবস্থা নিব।
এই বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, রাতের আঁধারে বালি চুরির বিষয়ে আমরা মাঝে মাঝেই জানতে পারি। আমরা সেখানে আমাদের টিম পাঠায় তার পরেও বন্ধ হচ্ছে না এই বালিকাঁটা।
এলাকাবাসীরা বলছে যদি প্রশাসনিক ভাবে মনিটরিং এর মাধ্যমে বালির ঘাটটি স্থায়ীভাবে বাঁশ বা লাল পতাকা ব্যবহার করে সেই সাথে সাইনবোর্ড লাগিয়ে বন্ধ ঘোষণা করা হয় তবে হয়তো বালি চোরাকারবারীরা ভীতিবস্ত হয়ে হয়তো বালি উত্তোলনে নিরুৎসাহিত হবে।
এসএনএইচ/কেএসসি