কুষ্টিয়ায় রথযাত্রা উৎসবে ইজারার নামে বিচ্ছু বাহিনীর চাঁদা আদায়ের অভিযোগ
কুষ্টিয়া রথযাত্রা উৎসব শুরুর আগেই ইজারার নামে বিচ্ছু বাহিনীর প্রকাশ্যে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। এ যেনো ফিল্মি স্টাইলে চাঁদাবাজি। শুক্রবার মেলার দিন বাজিমাতের আশায় প্রস্তুত রয়েছেন তারা। হাতিয়ে নিতে পারে লক্ষ লক্ষ টাকা।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও কুষ্টিয়া এনএস রোডে বসবে ঐতিহ্যবাহী রথ উৎসব। কুষ্টিয়া সরকারী বালিকা বিদ্যালয় হতে রক্সী গলী মোড় পর্যন্ত এই রথ উৎসব মেলা বসে প্রতিবছর। এবারেও তার ভিন্ন নয়। সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার থেকে মেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ইতিমধ্যে মেলার সকল দোকানগুলো রাস্তার সারি ধরে জমজমাট পূর্ন ভাবে সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। কিন্ত এই সুযোগে ইজারার কথা বলে প্রতি দোকান থেকে মোটা টাকা চাঁদা তুলছে বিচ্ছু বাহিনীর লোকজন। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলছে কুষ্টিয়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ কৌশিক আহমেদ ওরফে বিচ্ছুর লোকজন প্রতি দোকান থেকে মোটা অংকের এই চাঁদা তুলছে বলে ফুটপা ও অস্থায়ী দোকানদারেরা অভিযোগ জানিয়েছেন তাদের কাছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে সরেজমিনে হাজির হন দৈনিক সূত্রপাত পত্রিকার টিম। তারা তুলে আনেন আসল সত্যটা।
আনিস নামে একজন খেলনা বিক্রেতা বলেন, কাল মেলা শুরু হবে অথচ আজকেই আমার কাছে ইজারার কথা বলে ২৫০ টাকা নিয়েছে। সেই সাথে আমার আশেপাশের দোকানদারদের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম ইজারা কে নিয়েছে তারা বললো আমরা ৮নং কাউন্সিলর বিচ্ছুর লোক, ইজারা ছাড়া কি এমনি এমনি তোমাদের থেকে টাকা নিচ্ছি। ভয় দিয়ে কাল আবার আসবো বলে চলে যান তারা।
আরেকজন খই বিক্রেনা জাহিদ বলেল, আমি বিচ্ছু লোকদের আজ (বৃহস্পতিবার) টাকা দিয়েছি। আমি কৌশিক বা বিচ্ছু নামে কাউকে চিনি না। ইজারা নিয়েছে তাই সবাই দিচ্ছে আমিও ৩০০ টাকা দিয়েছি তাদের। কালকে শুক্রবার নাকি বেশি টাকা দিতে হবে।
এছাড়াও জিলিপী বিক্রেতা শাহিন, সরবত বিক্রেতা রজব আলী, দাঁ কুড়াল কাঁচি বটি বিক্রেতা সিকান্দার, পান সিগারেট বিক্রেতা রতন প্রামাণিক ও আরেক খেলনা বিক্রেতা জসিম উদ্দিন এরা সবাই এই বিষয়ে মুখ খোলেন। এদের সবার কাছ থেকেই ইজারার কথা বলে মোটা অংকের টাকা নেয়া হয়েছে। আগামীকাল আরও বেশি টাকা নেয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
সুত্রে আরও জানা যায়, মুলত ইজারা দেয়া হয়েছে বড়বাজার ও রাজার হাট এড়িয়ার জন্য। কিন্ত সেই সুবাদেই নাকি এই টাকা তোলা হচ্ছে সরকারী বালিকা বিদ্যালয় পর্যন্ত । এই হিসেবে আলাদা করে কোন ইজারা দেয়া হয়নি বলে জানা পৌর কর্তৃপক্ষ। এতে পৌরসভার কোন নির্দেশনাও নেই বলেও জানান তারা।
এই বিষয়ে কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রবিউল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, রথ উৎসব মেলার জন্য কোন প্রকার ইজারা দেয়া হয়নি, যদি কেউ এমন টাকা তুলে থাকে তবে সেটা বেআইনী। এখানে এমন কোন কিছু করার কোন সুযোগ নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই বিষয়ে কুষ্টিয়া পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিল শেখ কৌশিক আহমেদের সাথে কথা বললে তিনি অস্বীকার করেন। তিনি জানান, আপনাকে এই তথ্য কে দিয়েছে, আমার বক্তব্য হলো আমি কিছু জানিনা। এই বলে ফোন কেটে দেন।
বিষয়টি নিয়ে সকল দোকানদারদের সচেতন করতে স্থানীয়রা বলেন, যেহেতু এই রথ উৎসব মেলার কোন ইজারা নেই সেই সাথে ফুটপাতের দোকান থেকে ইজারার নামে চাঁদা তোলা হয় এগুলো সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে নেয়া হচ্ছে। সুতরাং এখন থেকে কেউ চাঁদা নিতে আসলে সবাই মিলে প্রতিহত করা হবে। প্রয়োজনে তাদেরকে আইনের হাতে তুলে দেয়া হবে।
উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি: মো: হাসান আলী
প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ ওবাইদুর রহমান
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: খালিদ সাইফুল
নির্বাহী সম্পাদক: রাশিদুল ইসলাম
নির্বাহী সম্পাদক: মিজানুর রহমান
বার্তা সম্পাদক: আব্দুল কাদের
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: লাল মোহাম্মদ সড়ক, হাটশ হরিপুর নদীরকুল, কুষ্টিয়া-৭০০০।
মোবাইল : ০১৮১৫-৭১৭০৩৪ । ইমেইল : khalidsyful@gmail.com ।
ই-পেপার কপি