দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক হুজুগ ও উস্কানী সৃষ্টি করে শিক্ষক লা না ও হামলা করে শিক্ষক হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহষ্পতিবার বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া পাবলিক লাইব্রেরীর সামনে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন কুষ্টিয়ার সভাপতি নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রগতিশীল নাগরিক অধিকার রক্ষা পরিষদের ব্যানারে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিবর্গ এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক সংহতি জানাতে অংশ নেন। এসময় বক্তারা বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত দিয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানী সৃষ্টি করে একের পর ্এক শিক্ষকদের উপর নৃসংশ হামলা মারধরসহ লাি ত করণ এবং হত্যাকান্ডে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূল শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় জাতির মেরুদন্ড নির্মানের কারিগর শিক্ষক সমাজ চরম বিপন্নের মুখে দাঁড়িয়ে আগামী দিনের যোগ্য নাগারিক গড়ে তোলার কাজ করতে ব্যর্থ হবেন বলে শংকা প্রকাশ করেন নেৃতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ রেজাউল করিম দাবি করেন, সারাদেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচানার নীতিমালা পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে। নড়াইলের কলেজ শিক্ষকের উপর হামলার সাথে ওই কলেজের পরিচালনা পরিষদের ক্ষমতা দখল পাল্টা দখলের দ্বন্দের জেরে সংঘটিত ঘটনার বলির পাঠা হয়েছেন উপাধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস। অবিলম্বে শিক্ষক নির্যাতন ও নিপীড়নসহ হত্যাকান্ডের সব কয়টি ঘটনার স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার নীতিমালা পরিবর্তনসহ প্রকৃত কারন উদ্ঘাটন করে সঠিক বিচার করতে হবে।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সরওয়ার মোর্শেদ বলেন, জাতির মেরুদন্ড নির্মানাকারী শিক্ষক নিজেই যেখানে সম্মান ও মর্যাদাহানির শিকার হন, হামলার শিকার হয়ে নিহত হন তখন এই জাতি গড়ার যে দায়িত্ব শিক্ষকের উপর বর্তায় তা পালন হয়ে যায় অনিশ্চিত। তাই সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিকল্পিত ভাবে ধর্মীয় উস্কানি সৃষ্টি করে কলেজ শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ^াসকে লা না এবং ঢাকার সাভারে উৎপল কুমার সরকারকে হামলা করে যে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
প্রতিবাদ সমাবেশের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে একটি কু-চক্রী মহল ধর্মীয় গুজব ছড়িয়ে দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে রাষ্ট্রীয় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। অবিলম্বে এদের সনাক্ত করে প্রয়োজনে বিশেষ ট্রাইবুনালে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুনীল কুমার চক্রবর্তী, সিবিবির সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, উদিচীর সাধারণ সম্পাদক গোপা সরকার, কুষ্টিয়া জেলা স্কুলের শিক্ষক মীর জাহিদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড হাফিজ সরকার এবং সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য কারশেদ আলম, রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর হাসিবুর রহমান তামিম, সম্মিলিত সাংসকৃতিক জোট কুষ্টিয়ার সাধারন সম্পাদক শাহীন সরকার, সৈয়দা হাবিবা, শিক্ষক ফয়েজুর রহমান, এহসানুল করিম সবুজ, বাসদ নেতা আশরাফুল ইসলাম, সিডিএল ট্রাষ্টের আকতারি বেগম, গণমাধ্যমকর্মী হাসান আলী, জাসদ নেতা আমিরুল ইসলাম মকলু, ফেয়ারের নির্বাহী পরিচালক দেওয়ান আকতারুজ্জামান, ছাত্র নেতা আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।