কুষ্টিয়ায় অসহায জন্মান্ধ উচ্চ শিক্ষিত সংগীত শিল্পী অঞ্জনা রানী হালদারের কর্মসংস্থান ও বাসস্থানের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের আব্দুর রাজ্জাক মিলনায়তনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে অন্ধ শ্রুতিলিপির মাধ্যমে নিজের অসহায় জীবনালেখ্যের করুন চিত্র তুলে ধরে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জন্মান্ধ অঞ্জনা রানী হালদার।
লিখিত বক্তেব্যে কুষ্টিয়া পৌর এলাকার বিবি নন্দী সড়কস্থ অর্পিত সরকারী জমির উপর পরিত্যাক্ত ঘরে বসবাসকারী শারিরীক প্রতিবন্ধী মান্দারি হালদার ও ফুলমালা হালদারের কন্যা অঞ্জনা বলেন, ‘জন্ম থেকেই আজন্ম পাপের করুন পরিনতি অন্ধত্বের কাছে মাথানত না করে নানা ঘাত প্রতিঘাত ও প্রতিকুলতা পেরিয়ে নিজেকে একজন যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়কে ধারন করে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন নিজেকে। কুষ্টিয়ার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্কুল তেকে শুরু করে প্রাইমারি, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ থেকে সর্বশেষ ইতিহাস বিষয়ে ¯œাতক সম্মানসহ ¯œাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন ২০১৭ সালে। একই সাথে কুষ্টিয়া শিল্পকলা একাডেমী থেকে ৪বছর মেয়াদী সংগীত শিক্ষায় ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করেছেন। বিদ্যমান অবস্থায় ন্যূনতম জীবন ধারনযোগ্য একটা কর্মসংস্থান এবং মাথাগোঁজার মতো একটা ঠাঁয় পেতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন। এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজে সরাসরি প্রধানন্ত্রীর সাথে দেখা করে দুরাবস্থার নিরসনের আবেদন করতে চাই।
এসময় অঞ্জনার সাথে উপস্থিত ছিলেন নিকট প্রতিবেশী রেহানা আহমেদ, অঞ্জনার মা ফুলমালা হালদার, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল মামুন সাগর, সাধারন সম্পাদক আনিসুজ্জামান ডাবলু, এডিটরস ফোরামের সভাপতি মজিবুল সেখসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অঞ্জনার মা ফুলমালা হালদার বলেন, ‘শিক্ষা জীবনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে অঞ্জনা। সমাজের কোন না কোন ক্ষেত্রে কাজ করে নিজের অবদান রাখার মতো যোগ্য হয়ে উঠেছে।’ কিন্তু দু:খ ও পরিতাপের বিষয় হলো- অসহায় ভুমিহীন জন্মান্ধ অঞ্জনার সরকারী চাকরীর বয়স শেষ হয়েছে আরও আগেই। নিজের ন্যূনতম জীবন ধারনে এক চিলতে মাথা গোঁজার ঠাঁইসহ একটা কর্মসংস্থানের আবেদন নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে দাবি ফুলমালা হালদারের।
তবে এবিষয়ে কুষ্টিয়া সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক) মুহাম্মদ মরাদ হোসেন বলেন, ‘অঞ্জনা জন্মগত ভাবেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অঞ্জনা হালদার সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী। শিক্ষা জীবন শেষ করে এখন সে একটা কাজের দাবি করছে ভালো কথা, তবে তাকেই বিষয়টি আমাদের কাছে এসে পরিস্কার করতে হবে যে অঞ্জনা কি ধরনের কাজ করার যোগ্যতা রাখে। তাহলে ওর সক্ষমতা অনুযায়ী একটা কাজ পাইয়ে দেয়ার মতো চেষ্টা আমরা সম্মিলিত ভাবেই করতে পারি।’