জুয়েল-সফুরাদের মতো যেখান থেকে অসংখ্য সাঁতারুরা উঠে আসে। যদিও ওদের সম্বল কেবল এলাকার পুকুর-খাল। বিনোদনের খোরাক জোগালেও ‘‘কুষ্টিয়া সুইমিং ক্লাবটি সাঁতারুদের কাজে আসছে না’ স্বপ্ন আর সাধ্যের মধ্যে ফারাক টেনেছে জেলা শহর থেকে মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের দূরত্ব।
জেলাবাসীর স্বপ্নের সুইমিং ক্লাবটি সাঁতারুদের কাজে না আসলেও বিনোদন পিপাসিদের স্বপ্ন যেন পুরণ হয়েছে। এখানে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের সাঁতার শেখানোর বদলে চলছে গোসল।
ঘণ্টায় নেওয়া হচ্ছে একশত টাকা। পরিবার-পরিজন নিয়েও অনেকেই এখানে আসছেন গোসল করতে। বিনিময়ে মিটাচ্ছেন ঘণ্টায়টাকা। বলছিলাম শহরের প্রাণকেন্দ্র জেলা স্টেডিয়ামের পাশে অবস্থিত কুষ্টিয়া সুইমিং ক্লাবের কথা। ক্লাবটি চালু রাখতে নির্মাণের পর থেকেই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান হিসেবে লিজ দেওয়া হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। সুইমিং পুলটিতে নামমাত্র রাখা হয়েছে সুইমার প্রশিক্ষক। নেই কোনো সাঁতারু। নামেই শুধু জেলা ক্রীড়া সংস্থার সুইমিংপুল। জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে সাঁতার শেখানোর তেমন একটা ব্যবস্থা নেই এখানে।
শুধু প্রতিবছর স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশ গ্রহণে বার্ষিক সাঁতার প্রতিযোগিতা করে সব দায়িত্ব যেনো এখানেই শেষ করছেন জেলা ক্রীড়া সংস্থা।
এ দিকে সরকারের জাতীয় ক্রীয়া পরিষদের অর্থায়নে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কুষ্টিয়া জেলা ক্রীয়া সংস্থার সুইমিং পুলটি ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের সাংসদ মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি।
নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল। মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি জেলাবাসীর সুইমিংপুলের স্বপ্ন বাস্তবায়ণ করলেও জেলা ক্রীয়া সংস্থার সদ-ইচ্ছার অভাব ও তাদের উদাসীনতার কারণেই কুষ্টিয়াবাসীর সুইমিংপুলটি কোনো কাজে আসছে না। এতে ক্রীয়া সংস্থার উদাসীনতাকেই দুষছেন নতুন ও সাবেক সাঁতারুরা।
অন্যদিকে শহরের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারী স্কুল-কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা জানান, এই সুইমিংপুলটিতে সাঁতার শেখানোর বদলে চলছে গোসল। ১ঘণ্টায় নেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। তাই বন্ধুদের সাথে নিয়ে গোসল করতে এসেছি এখানে। একঘন্টা হয়ে গেলেই কতৃপক্ষের লোকজন এসে ডেঁকে তুলে দেন। সরকারি টাকা ব্যয়ে সুইমিংপুলটিতে সাঁতার শেখানোর কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেই এখানে। তাই বলা যেতেই পারে এটি জেলাবাসীর স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের কোনো কাজে আসছে না। তাই জেলা ক্রীড়া সংস্থা সুইমিংপুলটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মুক্ত করে উন্মুক্ত করে দিয়ে জেলার তরুণ-তরুণীদের সাঁতার শেখানোর ব্যবস্থা তৈরী করার দাবিও তোলেন তাঁরা।
এ বিষয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার সাদাত-উল-আনাম পলাশ বলেন, কাজে আসছে না এটি ঠিক না। তবে দেশের সব গুলো সুইমিংপুল বন্ধ হয়ে গেছে। এই সুইমিংপুলটি আমরা চালু রাখতে ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচিত ২২জন সদস্য এটি লিজ নিয়েছি। নির্মাণের পর থেকেই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান হিসেবে লিজেই ছিল এটি।
বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আমিরুল ইসলাম জানান, জুয়েল-সফুরা, রুবেল রানা ও লাবণী আক্তার জুঁইয়ের মত খ্যাতিমান সাঁতারু মিরপুর উপজেলার আমলা গ্রামে তাদের জন্মস্থান। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এখানকার সাঁতারুরা বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত করছে বাংলাদেশকে। তারা এই এলাকার পুকুর থেকে সাঁতার শিখে খ্যাতি অর্জন করে চলেছে। কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের এমপি মাহবুবউল আলম হানিফ সাহেব জেলা স্টেডিয়ামের পাশে জেলাবাসীর স্বপ্নের দৃষ্টিনন্দন সুইমিংপুলের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করলেও জেলা ক্রীয়া সংস্থার উদ্যোগ না থাকায় তা কোনো কাজে আসছে না। কুষ্টিয়া থেকে আমলার দুরত্ব বেশি হওয়ায় এখানকার ছেলে-মেয়েরা কুষ্টিয়া সুইমিংপুলে তাদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব হয় না। বড় একটা খরচের বিষয়ও আছে। তাই তাদের এলাকার পুকুরই একমাত্র শেষ ভরসা।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার নন্দী বলেন, অবশ্যই কাজে আসছে এই সুইমিংপুলটি। সাঁতার শেখানোর বদলে গোসল করা হচ্ছে কথাটি সঠিক নয়, নিয়ম মেনেই সুইমিংপুলটি লিজ দেওয়া হয়েছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচিত সদস্যদের কাছে। মাসিক বিশহাজার টাকা লিজ বাবদ নেওয়া হয়। এর আগেও সুইমিংপুলটি এক ব্যবসায়ীর কাছে লিজ দেওয়া হয়েছিল। সারাদেশের সুইমিংপুল গুলো যেভাবে চলে। আমাদেরটাও সেভাবেই চলে।
উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি: মো: হাসান আলী
প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ ওবাইদুর রহমান
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: খালিদ সাইফুল
নির্বাহী সম্পাদক: রাশিদুল ইসলাম
নির্বাহী সম্পাদক: মিজানুর রহমান
বার্তা সম্পাদক: আব্দুল কাদের
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: লাল মোহাম্মদ সড়ক, হাটশ হরিপুর নদীরকুল, কুষ্টিয়া-৭০০০।
মোবাইল : ০১৮১৫-৭১৭০৩৪ । ইমেইল : khalidsyful@gmail.com ।
ই-পেপার কপি