কুষ্টিয়ায় কাল বৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে কয়েকটি গ্রাম। শনিবার সকাল ৫টার দিকে শুরু হওয়া এই ঝড়ের তোড়ে উড়ে গেছে শত শত কাঁচা আধাপাকা ঘরের টিনের চালা। উপড়ে গেছে গাছপালা। গাছ পড়ে ছিড়ে গেছে বিদ্যুতের তার ভেঙ্গে গেছে শতাধিক পল্লী বিদ্যুতের খুটি, এতে বিস্তীর্ণ এলাকার গ্রাহকরা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের শিকার হয়েছে। জেলার বেশ কয়েকটি স্পটে আ লিক সড়ক মহাসড়কে গাছ পড়ে স্বাভাবিক যোগাযোগ বিঘ্ন হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে বিভিন্ন পরিবহন। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে আম, জাম, লিচু, কলাসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিনে,আক্রান্ত এলাকায় যায়, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঝড়ের তাণ্ডবে শত শত গাছপালা ভেঙে রাস্তায় পড়ে আছে। শত শত হেক্টর জমির আম, কাঁঠাল, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক বিদ্যুতের খুটি ভেঙ্গে তার চিড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সভাপতি কা ন কুমার হালদার। এসব লাইন মেরামত করে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে বেশকিছুটা সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।
গাছ ভেঙে রেল লাইনের ওপর পড়ায় পোড়াদহ-খুলনা রুটে প্রায় ৫ ঘন্টা স্বাভাবিক ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিলো বলে নিশ্চিত করেছেন পোড়াদহ জংশনের ষ্টেশন মাস্টার আনোয়ার সাদাত।
কুষ্টিয়া-মেহেরপুর আ লিক মহাসড়কে অসংখ্য গাছ ভেঙ্গে পড়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় জরুরী ভিত্তিতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজ শেষ করে প্রায় ৭ ঘন্টা পর কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেন বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো: জানে আলম।
মিরপুর উপজেলার খয়েরপুর গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সাড়ে তিন বিঘা কলা ক্ষেতের গাছ উপড়ে/ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই কলা বাগান প্রস্তুত করতে আমার দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের অফিসার ইনচার্জ মামুন আর রশিদ বলেন, ‘শনিবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে ৭ কেটিএফ ঝড় ও ২৫ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। তবে কুমারখালী উপজেলায় ঝড়ের মাত্রা কিছুটা কম থাকলেও মিরপুর, ভেড়ামাড়া, দৌলতপুর ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলার অধিকাংশই আক্রান্ত।’
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক বলেন, ‘ঝড়ে আম, জাম, কাঠাল কলা লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল, এবং উঠতি ধানের ক্ষেতেও বেশ বিরূপ প্রভাব পড়েেেছ। তবে তাৎক্ষণিক ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নির্ণয় করা যায়নি। আমাদের কর্মীরা মাঠ থেকে ফিরলে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির একটা চিত্র পাওয়া যাবে।’