ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০ টাকায় কম্পিউটার বিক্রি!
কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অর্ধশত অব্যবহৃত পুরাতন কম্পিউটার, ফটোকপি মেশিন, প্রিন্টারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এসব কম্পিউটার ৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোর রুম পরিষ্কারের কথা বলে এস্টেট অফিস প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) টিপু সুলতান ও তার সহযোগী উকিল উদ্দীন ও সাবু পুরাতন জিনিসপত্র বিক্রি করেন। বিক্রি করা জিনিসের মধ্যে রয়েছে কম্পিউটার, মনিটর, লোহার পাইপ, জানালার গ্রিল, ফটোকপি মেশিন, প্রিন্টার ও অন্যান্য কাগজপত্র। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই এসব জিনিসপত্র বিক্রি করা হয়। প্রতিটি কম্পিউটার ৫০ টাকা এবং সিপিইউ ও অন্যান্য জিনিস ওজনে বিক্রি করা হয়।
আরও জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অব্যবহৃত পুরাতন জিনিস বা কোন কিছু বিক্রি করতে হলে উপচার্যের অনুমোদন নিয়ে বিক্রয় কমিটির মাধ্যমে নিলামে তুলে সেগুলো বিক্রি করা হয়। এজন্য ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়াকে নিলাম কমিটির আহ্বায়ক করে উপাচার্য চার সদস্যের একটি কমিটি করে দেন। তবে কমিটির কেউই এই জিনিস বিক্রি সম্পর্কে অবগত নয় বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এস্টেট অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রায় একশ পুরাতন কম্পিউটার, ১০-১২টি ফটোকপি মেশিন ও প্রিন্টার, ১০ মণ রড, জানালার পুরাতন গ্রিল, পুরাতন ব্যবহারযোগ্য লোহার পাইপ ও প্রায় সাড়ে চারশ কেজি কাগজ বিক্রি করা হয়েছে। টিপু তার সহযোগী সাবু ও উকিলের সহযোগিতায় শুধু গেট পাস করে জিনিসগুলো বিক্রি করেছে।
এর আগেও টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা বেশি মূল্যে ক্রয় এবং অফিসের জিনিসপত্র ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে জাতীয় পতাকার অর্থ লোপাট শিরোনামে একটি সংবাদও প্রকাশিত হয়।
উকিল উদ্দীন বলেন, আমি শুধু মাপামাপির সময় গেছিলাম। পরে চলে আসছি। আমি এসব কিছু জানি না।
বকুল হোসেন বলেন, আমাকে টিপু স্যার হিসাব রাখা এবং মাপ ঠিক আছে কি না এটা দেখার জন্য পাঠিয়েছিল। আমি হিসাবগুলো লিখেছি। তিনি প্রতিবেদককে ৪৩টি পুরাতন কম্পিউটার ৫০ টাকা করে, ৩টি বড় লোহার পাইপ (বাইশ থেকে তেইশ কেজি), সিপিইউ (ওজনে) এবং প্রায় ৪৫০ কেজি কাগজ বিক্রির হিসাব দেন।
অনুমোদনের বিষয়ে জানতে চাইলে টিপু সুলতান বলেন, অনুমোদনের বিষয়টা অনেক সময় মেইনটেইন করা হয় আবার অনেক সময় মৌখিক অনুমোদন নেওয়া হয়। বিক্রিত বেশির ভাগ জিনিসই কাগজ ছিল। রুমটা পরিষ্কার করার দরকার ছিল তাই ট্রেজারার স্যারের মৌখিক অনুমোদন নিয়েছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন বলেন, স্টোর রুমের জিনিস বিক্রির বিষয়ে আমাকে জানালে আমি বলেছিলাম, নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো জিনিস মুখে মুখে অনুমোদন হয় না। তারা কার অনুমোদন নিয়ে জিনিস বিক্রি করেছে, ছুটি শেষে দেখব। সূত্র: ঢাকা পোস্ট