কুষ্টিয়ায় ৪৭০ বস্তা চাউল নিয়ে উধাও হওয়ার এক মাস পর উদ্ধার; দুই চোর আটক
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের তৎপরতায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগরের মেসার্স নুর অটো রাইস মিলের ৪৭০ বস্তা (১৩,০০০ কেজি) চাউল ট্রাকসহ উধাও হওয়ার এক মাস পর উদ্ধার করা হয়েছে । সেই সাথে দুই চাউল চোর মোঃ মনিরুল ইসলাম (৪০) ও মোঃ আলমগীর (৩২) কে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থেকে আটক করেছে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ আভিযানিক দল । আটক চোর মোঃ মনিরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জের চৌহালী থানার চর ছলিমাবাদ গ্রামের নূর মোহাম্মদের পুত্র এবং মোঃ আলমগীর টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানার গৌরীশ্বর এলাকার হবিবর এর পুত্র ।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারী সন্ধা ৭ টার সময় খাজানগরস্থ মেসার্স নূর অটো রাইচ মিল এর মালিক মোঃ আমিরুল ইসলাম (৬৪) একটি কাভার্ড ভ্যান যোগে ২৫ কেজি ওজনের ৪২০ বস্তা ও ৫০ কেজি ওজনের ৫০ বস্তা সর্বমোট-৪৭০ বস্তা ( ১৩,০০০ কেজি) বাসমতি চাউল নারায়নগঞ্জের মুক্তি স্মরনী চট্টগ্রাম রোডস্থ হাজী আহসান উল্লাহ সুপার মার্কেটে অবস্থিত মেসার্স মিতু রাইচ এজেন্সীর আলহাজ্ব মোক্তার হোসেন সরকারকে প্রেরণ করেন । কিন্ত উল্লেখিত চাউল কাভার্ড ভ্যনের চালক বর্ণিত এজেন্সীতে জমা না দিয়ে একটি অসাধু চক্রের সহযোগীতায় সমূদয় চাউল আত্মসাৎ করে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মেসার্স নূর অটো রাইচ মিল এর মালিক মোঃ আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৯ জানুয়ারী ২০২২ ইং তারিখে কুষ্টিয়া মডেল থানায় পেনাল কোডের ৪০৭ ও ৪২০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন । কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলমের নির্দেশে এবং কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাব্বিরুল আলমের তত্ত্বাবধায়নে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের চৌকস পুলিশ অফিসার এসআই(নিঃ) মোঃ সাহেব আলী’কে ।
এদিকে আত্নসাৎকৃত চাউল উদ্ধার এবং দুই জন আসামীকে আটকের বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের আয়োজনে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার ১ ফেব্রুয়ারী দুপুর ২ঃ৩০ মিনিটে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয় । উক্ত প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলম বলেন, খাজানগর এলাকায় অনেক গুলো অটো রাইস মিল আছে, যেখানে অনেক চাইলের প্রডাকশন হয় । সারা অধিকাংশ জেলা কুষ্টিয়া থেকে চাউল যায় । অত্র এলাকায় যারা চাউলের ব্যবসা করেন তাদের যেন কোন সমস্যা না হয়, তারা যেন র্নিবিঘ্নে কুষ্টিয়া জেলায় ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে যেতে পারে তার জন্য কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সব সময় কাজ করে যাচ্ছে ।
বিষয়টি নিয়ে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিট, কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সাব্বিরুল আলম এবং পুলিশ অফিসার এসআই(নিঃ) মোঃ সাহেব আলী একযোগে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করার কারণেই আত্নসাৎকৃত চাউল উদ্ধার এবং দুই জন আসামীকে আটক করা সম্ভব হয়েছে বলে পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলমের বক্তব্যে প্রতীয়মান হয় । তবে এই বিষয়ে চাউল বহনকারী কাভার্ড ভ্যানের ড্রাইভারকে এখন পর্যন্ত আটক করা সম্ভব হয়নি ।
পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলম বলেন, আমরা চাউল বহনকারী কাভার্ড ভ্যানের ড্রাইভারের সকল আলামত যাচাই বাছাই করে দেখেছি । তার জাতীয় পরিচয় পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ীর রেজিস্ট্রেশন নাম্বার সহ সকল কাগজ পত্র জাল (ভূয়া) । সে ঢাকা ক্ষিলক্ষেত এলাকার জোয়ারসাহারার যে ঠিকানা দিয়েছিলো সেটিও ভূয়া । পরবর্তিতে আমরা কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিট দ্বারা অভিযান পরিচালনা করে মজমপুর এলাকার সঞ্জয় দত্ত (৪৫) কে আটক করি এবং তার দেওয়া তথ্য মতে ড্রাইভার রানা আহাম্মেদ (৪৫) মানিকগঞ্জ জেলার দীঘি ইউনিয়নের খাগড়াপুরি গ্রামের বাসিন্দা এবং পিতা অজ্ঞাত। এছাড়াও এই চক্রের সাথে খাজানগরের মৃত কুবাদ বাদশার পুত্র মনো বাদশা, বটতৈল মধ্যপাড়ার রাশেদ (৫০) এবং খাজানগর দোস্তপাড়ার মহিরুল (৩৭) জড়িত আছে বলে পুলিশ সুপার জানান ।