অর্থের অভাবে চার সন্তানের লাশ চেয়ে চেয়ে দেখলেন
একসঙ্গে জন্ম নেওয়া পাঁচ সন্তানের জনক সোহেল
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পান্টি গ্রামের সাদিয়া (২৪) নামে এক মা পাঁচ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন গত মঙ্গলবার। একসঙ্গে চার মেয়ে ও এক ছেলের জন্ম হলেও একে একে মারা গেছে চার সন্তান
। বুধবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম মারা যায় ছেলে সন্তানটি। পরে একে একে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আরও দুই সন্তানসহ মোট তিন সন্তান মারা যায়, তারপর বৃহস্পতিবার সকালে আরও একজন মারা গেলে পাচটির মধ্যে চারটিই মারা যায়। শিশুদের বাবা জানান উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলো চিকিৎসকরা, আমার টাকা থাকলে হয়তো এমনটা হতো না।
শিশুদের বাবা সোহেল রানা বলেন, আমার চারটি সন্তান মারা গেছে। খুবই কষ্ট লাগছে। আর বাকি এক মেয়ে শিশুও ঝুঁকিতে আছে। স্ক্যানো ওয়ার্ডে তাদের অক্সিজেন চলছে। তবে তাদের মা সুস্থ আছে। শিশুর ওজন কম হওয়ায় ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেছেন চিকিৎসক। কিন্তু অর্থের অভাবে ঢাকায় নিতে পারিনি।
শিশুদের দাদা সামাদ আলী বলেন, চার শিশু মারা গেছে। তাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গ্রামের গোরস্থানে আলাদাভাবে তাদের দাফন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা দরিদ্র, আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না। ছেলে সোহেলের চা দোকানের আয়ে সংসার চলে। টাকার অভাবে শিশুদের ঢাকায় নিয়ে যেতে পারিনি। যদিও চিকিৎসকরা প্রথম থেকেই ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। টাকার অভাব না থাকলে হয়তো শিশুদের ঢাকায় নিয়ে যেতে পারতাম। সবগুলো শিশু একসঙ্গে বেড়ে উঠলে ভালো লাগতো।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আশরাফুল আলম বলেন, গর্ভধারণের পাঁচ মাসের মাথায় জন্ম নেওয়া শিশুদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল। বাচ্চাদের ওজন ৪৩০ গ্রাম থেকে ৬৫০ গ্রামের মধ্যে। তিনি আরও বলেন, জন্ম নেওয়া শিশুদের চারজন মারা গেছে। বুধবার সকালে একমাত্র ছেলে সন্তানটি ও বিকেলে আরও দুই কন্যা সন্তান এবং বৃহস্পতিবার সকালে আরও এক কন্যা সন্তান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।