অসাম্প্রদায়িক লালন
লেখক:ওবাইদুর রহমান সুমন
“ভেবে অন্ত নাহি দেখিকার
বা খাঁচায় কেবা পাখি,
আমার আঙ্গিনায় থাকি,
পাখি আমারে মজাইতে চাই”
লালন শাহ এর বাণীগুলো ছিল মানুষ, সমাজ আর রাষ্ট্র নিয়ে। তিনি একা ধারে একজন আধ্যাত্মিক বাউল সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং অসাম্প্রদায়িক দার্শনিক। যিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ সকল প্রকার জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছেন।
তার মূল চিন্তা-চেতনা ছিল, মানুষের আত্মশুদ্ধি কিভাবে হবে। যদি প্রত্যেকটি মানুষ তার নিজের জায়গায় শুদ্ধ থাকেন, তবে পরিবার, সমাজ আর রাষ্ট্র থেকে হানাহানি-মারামারি আর স্বার্থপরতা দূর হয়ে যাবে। আর মানুষ শিখতে পারবে কিভাবে চলার পথে ছাড় দিতে হয়। একমাত্র ছাড় দেওয়ার মন-মানুসিকতাই পারে সুখী-সমৃদ্ধশালী সমাজ গঠন করতে।
নেশা মানুষকে নষ্ট করে। সমাজ-সংসার ধ্বংস করার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। লালন তার জীবদ্দশায় তার আদর্শে কোন ধরণের নেশাকে লালন করেননি। সমাজে কিছু অবিবেকবান মানুষ লালন চর্চা সঙ্গে নেশাকে মিলিয়ে ফেলেছে। সমাজের কিছু মানুষ স্বার্থপর, বেঈমান আর হানাহানির নেশায় লিপ্ত হয়ে গেছে। যা লালন চর্চাসহ, সুন্দর সমাজ গঠনের অন্তরায়।
‘‘এমন সমাজ কবে গো সৃজন হবে,
যেদিন হিন্দু, মুসলমান,বৌদ্ধ, খ্রিস্টান
জাতি গোত্র নাহি রবে ”
লালনের লেখার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে অসম্প্রদায়িক সমাজ গঠনে তার চিন্তা-ভাবনা। এই চিন্তা-ভাবনা আধুনিক সমাজ গঠনে সমাজের দর্শন হিসাবে গ্রহণ করে অভিন্ন বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। আজকের এই দিনে সাইজিকে জানাই সশ্রদ্ধ অভিবাদন।