বিএনপির ডাকের অপেক্ষায় শরিক দলগুলো
অঙ্গীকার ডেস্ক :
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী দিনের চিন্তা মাথায় রেখে ২০-দলীয় জোটকে চাঙা করতে উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। কিন্তু তার আগে নামসর্বস্ব দলের ব্যাপারে আপত্তি উঠেছে বিএনপির মধ্যে। দলের নেতারা বলছেন, যোগ্য দলকে এই জোটে শামিল করা হোক। তবে শরিকদের মধ্যে তেমন কোনো চিন্তা নেই। তারা অপেক্ষায় আছে বিএনপির কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক ডাক পাওয়ার।
দলের কর্মপন্থা নির্ধারণে ভেতরের মতামত নিতে ধারাবাহিক সভা করে যাচ্ছে বিএনপি। সেখানে উঠে আসছে নানা মতামত। এসব মতের মাঝে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের বিষয়টি বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। সবার চাওয়া ছিল, ঝুলে থাকা বিষয়টির সমাধান করা হোক। একই সঙ্গে জোট নিয়েও নানা পরামর্শ দিয়েছেন বক্তারা।
এসব পরামর্শ বিবেচনায় নিয়েই আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করার কথা বলছে দলটি। ঠিক তখনই বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট নিয়েও কথা বলা শুরু করেছে শরিকেরা। তারাও চায় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হোক। বর্তমান এবং আগামী দিনের চিন্তা করে জোটে সংস্কারের তাগিদও অনুভব করছেন কেউ কেউ।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) একাংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, বিএনপির ধারাবাহিক বৈঠক শেষ হলে ২০-দলীয় জোটের শরিকদের আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। সেখানে জোটের সার্বিক বিষয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে আগামী মাসের শুরুতেই এই বৈঠক হবে। বিএনপির পক্ষ থেকে বৈঠকের বিষয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে এমন বার্তা পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ্ প্রিন্স স্পষ্ট করে কিছু জানাননি। তবে বৈঠক হবে, সেটা জানান। অক্টোবরে বৈঠক হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঠিক আছে, হবে (বৈঠক)। নীতিনির্ধারণী সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
গত বছরের জুলাইয়ে শেষবারের মতো আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয় ২০-দলীয় জোটের। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন সময়ে তারা বসেছে। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসন বণ্টন ও মূল্যায়ন করা নিয়ে নানা কারণে জোটের শরিকদের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব সৃষ্টি হয়। জোটভুক্ত জামায়াতসহ প্রায় সব শরিকেরই অভিযোগ, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে বিএনপি। ২০-দলীয় জোটকে অবহেলা করেছে। আর এসব কারণে এরই মধ্যে জোট থেকে বেরিয়ে গেছে অনেক দল। সম্প্রতি কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম বলেছেন, এখন ২০-দলীয় জোট আছে বললেও সঠিক, নেই বললেও সঠিক। আর এ বিষয়ে তাঁর দলের অবস্থান ‘দুই পা দুই দিক’। এমন এক অবস্থায় জোটের বৈঠকের খবরে শরিকদের মাঝে আশার সঞ্চার হয়েছে।
জামায়াত নিয়ে বিএনপির কাছে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত চেয়েছে জাতীয় পার্টির (একাংশ)। এর চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, জামায়াত ইস্যুতে বিএনপির আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত না থাকলেও দলটির একটা অংশের অভিযোগ ও আপত্তি আছে। এ বিষয়ে বিএনপিকে একটা আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তে আসা দরকার। তবে ২০-দলীয় জোটে জামায়াত নিয়ে কারও আপত্তি নেই বলে তাঁর দাবি।
জোটের নেতারা বলছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দী হওয়ার পর ২০ দলের কর্মকাণ্ড ঝিমিয়ে পড়ে। সন্দেহ-অবিশ্বাস আর অভিমানে জোটের অবস্থা নাজুক। এখন জোট নিয়ে নতুন করে ভাবা দরকার। এই অবস্থায় সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন অনেকে। তাঁরা বলছেন, অপ্রয়োজনীয় যেসব দল আছে, যাদের নেতা এবং দল কোনোটারই আবেদন নেই, তাদের বাদ দেওয়া দরকার। যোগ্য দল বাছাই করে তাদের জোটে সম্পৃক্ত করা উচিত।
শাহাদাত হোসেন সেলিম এ প্রসঙ্গে বলেন, ২০-দলীয় জোটের আগের আবেদন এই মুহূর্তে নেই। জোটের অনেকগুলো দলই সত্যিকার অর্থে ওয়ান ম্যান শো। সংস্কারের দরকার আছে। সংযোজন-বিয়োজন করে নতুন কোনো নাম দিয়ে শুরু করা দরকার। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এ কাজের এটাই উপযুক্ত সময়।
২০-দলীয় জোটের পরিকল্পনার বিষয়ে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান জানান, আওয়ামী লীগের দুঃশাসন থেকে মুক্তির জন্য জোট করা হয়েছে। কয়েক দিন পরেই বৈঠক হবে। জোটের প্রধান সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান এই মুহূর্তে অসুস্থ। তিনি সুস্থ হলেই বৈঠক হবে।
২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট গঠনের পর পর্যায়ক্রমে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ও সাম্যবাদী দল যোগ দিলে তা ২০-দলীয় জোটে রূপ নেয়। গত কয়েক বছরে ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ন্যাপ, এনডিপি, এনপিপি, লেবার পার্টি, জাতীয় পার্টি এবং সর্বশেষ গত ১৪ জুলাই জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একটি অংশ জোট থেকে বেরিয়ে যায়।
উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি: মো: হাসান আলী
প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ ওবাইদুর রহমান
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: খালিদ সাইফুল
নির্বাহী সম্পাদক: রাশিদুল ইসলাম
নির্বাহী সম্পাদক: মিজানুর রহমান
বার্তা সম্পাদক: আব্দুল কাদের
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: লাল মোহাম্মদ সড়ক, হাটশ হরিপুর নদীরকুল, কুষ্টিয়া-৭০০০।
মোবাইল : ০১৮১৫-৭১৭০৩৪ । ইমেইল : khalidsyful@gmail.com ।
ই-পেপার কপি