মৎস্য চাষের অন্তরালে কালুর মাদকের রমরমা ব্যবসা
অঙ্গীকার ডেস্ক :
কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়ানে ৬ নং ওয়ার্ডের কালীনদীর পাড়া-মহল্লায় হাত বাড়ালেই মিলছে সব ধরনের মাদকদ্রব্য। মরণনেশা ইয়াবা, গাজা, ও নিষিদ্ধ ট্যাপেন্ডাতে ডুবে থাকছে ৬নং ওয়াড ও কালীনদীর আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের উচ্চবিত্ত থেকে শু করে নিম্নবিত্ত শ্রেণির কিছু মানুষ। এ তালিকায় রয়েছে উঠতি বয়সী যুবসমাজ, স্কুল-কলেজের ছাত্র ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এতে করে আশে পাশের ইউনিয়ানে মাদকাসক্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এলাকায় উঠতি বয়সের তরুণ ও যুবকের মধ্যে মাদকসেবীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় অভিভাবক মহল উদ্বিগ্ন-উৎকণ্ঠায় আছেন। এসব মাদক বিক্রির তালিকায় প্রভাবশালী কালু ও তার চেলা পেলা জড়িত। আর প্রভাবশালীদের কারনেই প্রশাসনও রয়েছে বেকায়দায়। পুলিশ রাজনৈতিক দলের কর্মীকে বিভিন্ন মাদকদ্রব্যসহ গ্রেফতার করলে সঙ্গে সঙ্গে তদবির শুরু করে দেয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতারা। মাদকদ্রব্যের মামলায় মাদক ব্যবসায়ীদের আদালতে চালান দেয়ার কিছুদিন পর জামিনে এসে আবারো মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দুর্বলের কারণে আসামিরা ছাড়াও পেয়ে যায়। প্রতিদিন বাড়ছে মাদকসেবীর সংখ্যা, এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় অভিভাবকেরা। বর্তমানে কালীনদীতে মাদকের আখড়া বলে অভিহিত করেছেন অনেকেই। অনুসন্ধানে জানা গেছে , কুমারখালী উপজেলা চাপড়া ইউনিয়নে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক স্পটে মাদকসেবীদের আড্ডা রয়েছে। যারা কিছুটা বিত্তশালী তারা ফেনসিডিলের দিকেই ঝুঁকে রয়েছে। আর ইয়াবা ট্যাপেন্ডা -গাঁজার দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় এ মাদকের দিকে নজর ও আকৃষ্ট মাদকসেবীরা । ৬নং চাপড়া ইউনিয়ান বাঁধবাজার নগর সাওতা গ্রাম থেকে শুরু করে কালীনদীর বাঁধ ,ও পারসাঁওতা বাজার হয়ে আশেপাশের কয়েকটি গ্রাম সহ সাঁওতা আমতলা বাজার পর্যন্ত মাদক সেবন-পাচার ও ব্যবসা জমজমাট। চাপড়া ইউনিয়নকে নিরাপদ আস্তানা ভেবে মুলত ঐ স্থানে কয়েকটি সিন্ডিকেট মাদক সেবনের নের্তৃত্ব দেন। অন্যদিকে ইয়াবা ও ট্যাপেন্ডা ব্যবসার বিশেষ কেন্দ্র চাপড়া ইউনিয়নের কালীনদীর বাঁধ পারসাঁওতা গ্রাম বিকেল হওয়ার সাথে সাথে কালী নদীর ধার দিয়ে শুরু হয়ে যায় মাদক কেনাবেচা সহ মাদক সেবন । অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের নগর সাঁওতা গ্রামের আশপাশ , পারসাঁওতা নদীর উপর , কান্চনপুর গলাকাটা মাঠ এলাকা, নিয়ামত বাড়ি মাঠের আশপাশ, সাঁওতা আমতলা বাজারের আশপাশ, থেকে শুরু করে মিরপুর ইস্কুলের ও আশরাফ সাধুর দোকান এলাকায় মাদক সেবন, ক্রয় বিক্রয়সহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয় অপরাধীরা। এই সব স্থানে রাত যতই গভীর হয়, ততই নতুন-নতুন মুখের আনাগোনা বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন স্থান থেকে মোটরসাইকেল হাঁকিয়ে নতুন-নতুন লোক জন এই সব এলাকায় আসেন। এসব এলাকায় সহজে মাদক সেবনের পথ তৈরী হওয়ায় বিভিন্ন মাদকসেবীদের দেখা যায়। এ ছাড়া ও কুমারখালি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ একাধিক স্পটে গোপনে মাদকের ব্যবসা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একসময় ফেনসিডিল, গাঁজা ও ইন্ডিয়ান মদের ব্যবসা করতেন গুটিকয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী। তাও খুব গোপনে বেচাকেনা হতো। এখন গাঁজা-মদের পাশাপাশি চলছে মরণনেশা ইয়াবা ও ট্যাপেন্ডা ট্যাবলেটের ব্যবসা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে কিছু ব্যক্তি বলেন, ক্ষমতাধর এসব মাদক ব্যবসায়ীরা বেশির ভাগই সবাই অল্পবয়সী। এরা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত একথা শুনলে কেউ বিশ্বাসও করবে না। । প্রতিদিন সকাল বেলা উন্নতমানের পোশাক পরে বাড়ি থেকে বের হয়, আর রাতে বাড়িতে ফিরে। পোশাকধারী এসব যুবকদের পকেটে থাকে ইয়াবা ট্যাবলেট, যা হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে পরিচিত মাদক সেবনকারীদের কাছে। এ কারণে এসব আল্পবয়সী মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে পারছে না পুলিশ। মা-বাবার চোখের সামনে মাদকাসক্ত হচ্ছে ছেলে। এ কষ্ট কিভাবে মেনে নেবে অভিভাবকরা। তাই মাদকাসক্ত সন্তানদের নিয়ে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বাবা-মা। কুমারখালী উপজেলার যুবসমাজকে রক্ষা করতে হলে এসব মাদক ব্যবসায়ীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। আর এ জন্য পুলিশকে আরো সক্রিয়ভাবে মাঠে নামতে হবে। এদিকে প্রশাসন বাহিনীর সমন্নয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করার দাবি সচেতন মহলের।