চলে গেলেন মধ্য আকাশে হার্ট অ্যাটাকের শিকার হওয়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউম। আজ রোববার (২৯ আগস্ট) দুপুরে তার মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করেন বিমানের এমডি ড. আবু সালেহ মো. মোস্তফা কামাল। গেল শুক্রবার (২৭ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৬টায় ওমানের মাস্কাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে উড্ডয়ন করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-২২ ফ্লাইট। মাঝ আকাশে বড় ধরনের হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন বিমানের এই পাইলট ক্যাপটেন।
আবু সালেহ মো. মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তার লাশ দেশে আনা হবে। এদিকে শুক্রবার হার্ট অ্যাটাকের তাকে ভারতের নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালের সার্জিকেল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এসআইসিইউ) নেয়া হয়। সেখানে তিনি কোমায় ছিলেন বলে জানা যায়। হার্ট অ্যাটাকের পর তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। অবস্থা ধীরে ধীরে অবনতির দিকে পৌঁছায়।
রোববার সকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুমের অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ক্যাপ্টেন নওশাদের পরিবারের লোকজন হাসপাতালে উপস্থিত আছেন বলেও জানান বিমানের এমডি।
এদিকে জানা যায়, ৫ বছর আগে ক্যাপ্টেন নওশাদ তার বুদ্ধি ও কৌশল প্রয়োগ করে আরও ১৪৯ যাত্রী, দুই পাইলট আর ৭ ক্রু’র জীবন বাঁচিয়েছিলেন। পেয়েছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বিমান সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিমানের বিজি-১২২ ফ্লাইটে ক্যাপ্টেনের দায়িত্বে ছিলেন নওশাদ।
সেই ফ্লাইটটি মাস্কাট বিমানবন্দর থেকে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা করেছিল। টেক-অফ করার পর মাস্কাট বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে ক্যাপ্টেন নওশাদকে জানানো হয়, রানওয়েতে টায়ারের কিছু অংশ পাওয়া গেছে, যা সম্ভবত বিমান এয়ার ক্রাফটের হতে পারে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে নওশাদ বিমানটি চট্টগ্রাম অবতরণ না করে ঢাকা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন।
অবতরণের আগে ক্যাপ্টেন ফ্লাইটটি নিয়ে রানওয়ের উপরে দুইবার লো-লেভেলে ফ্লাই করেন। তখন দেখা যায়, উড়োজাহাজের পেছনের দুই নম্বর টায়ারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরে ক্যাপ্টেন নওশাদ দক্ষতার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত টায়ার ও ল্যান্ডিং গিয়ারসহই নিরাপদে ফ্লাইটটি ঢাকায় অবতরণ করাতে সক্ষম হন। এই ঘটনার পর ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ক্যাপ্টেন রন অ্যাবেল ক্যাপ্টেন নওশাদকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রশংসাপত্র পাঠায়।