শনিবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর ধানমণ্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট বিষয়ক একটি সেমিনারে এসব কথা বলেন ডা. জাফরুল্লাহ। এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে গণবিশ্ববিদ্যালয়।
ছয় মাসের মধ্যে নিজস্ব টিকা তৈরি টার্গেট নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, কিউবা, ইরান যেমন টিকা তৈরি করেছে, তেমনি বাংলাদেশ যদি চায় তাহলে রাশিয়া আমাদের সহযোগিতা করবে। আমরাই কিউবার মতো টিকা তৈরি করতে পারব। তখন এর দাম পড়বে আধা ডলার।
তিনি আরও বলেন, দেশে টিকা তৈরি করার জন্য আমি আগেও প্রস্তাব করেছি, আবারও করছি। অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক আজাদ, বিজন কুমার শীল আছেন। আরও দুই-চার জন যারা আছেন, তাদের নিয়ে টিকা তৈরি হবে। বক্তৃতা না দিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এই একটা কাজ করলেও প্রধানমন্ত্রী স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
তিনি বলেন, আমাদের বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ডিকোডিং করেছেন। এটার জন্য অনেক বেশি গবেষণার দরকার। আজ চীন একশ কোটি টিকা তৈরি করে বিক্রি করবে। ছয় মাসেরও আগে আমাদের এখানে চীন ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করতে চেয়েছিল, কিন্তু সেটা হয়নি। টিকা তৈরি নিউক্লিয়াস সাইন্সের ব্যাপার না। আমাদের অভিজ্ঞতা আছে, এখানে বিনিয়োগের প্রয়োজন।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, আজ রাশিয়ার সহযোগিতা নিয়ে কিউবা ও ইরান টিকা তৈরি করছে। দেড় বছর আগে আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম। আমাদের কথা শোনেননি। দেশের সব নাগরিককে আপনি ব্যবহারের চেষ্টা করেন। কে আওয়ামী লীগ করে, কে বিএনপি করে তা আপনার বিবেচ্য না।
গণবিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ডেল্টা ভাইরাসের সঙ্গে ফ্লু ভাইরাসের যথেষ্ট মিল রয়েছে এবং এটি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়ায়। ফলে পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে বাকি সবাই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ভাইরাসের ভয়াবহতা রোধে কেউ একজন আক্রান্ত হলে তার নিকটজন সবাইকে পরীক্ষা করতে হবে। হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই কাপড় বা টিস্যু ব্যবহার করতে হবে।
নিয়মিত মাস্ক পরিধান এবং টিকা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। ডেল্টা ভাইরাসের চিকিৎসার মতো ড্রাগস বিশ্ব বাজারে বিদ্যমান আছে। এছাড়া জিংকের সমন্বয়ে তৈরি ভিটামিন ‘সি’ গ্রহণে ডেল্টা ভাইরাস প্রতিরোধ সম্ভব। সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও এ ধরনের ভিটামিন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে অনুমোদন দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
ওয়েবিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএসএমএমইউ’র সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী, পিএইচসি’র সাবেক পরিচালক অধ্যাপক জাকির হোসেন, বিএসএমএমইউ’র ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সায়েদুর রহমান, আইইডিসিআর উপদেষ্টা ডা. মোস্তফা হোসেন, প্রধান স্বাস্থ্য বাতায়ন ডা. নিজাম উদ্দীন আহমেদ, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ড. এস. তাসাদ্দেক আহমেদ, উপাধ্যক্ষ ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার প্রমুখ।