সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি প্রায়ই প্রমোদ ভ্রমণে বিদেশ যেতেন। তার সফরসঙ্গী হতেন দেশের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা কিংবা ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা।
গত এপ্রিল মাসেও সবশেষ পরী দেশের এক শীর্ষ ব্যবসায়ী ও একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দুবাই ট্যুরে যান। অবস্থান করেন দুবাইয়ের সবচেয়ে অভিজাত ‘বুর্জ আল খলিফা’ টাওয়ারের হোটেল আরমানিতে।
টানা সাত দিন অভিজাত হোটেলে ‘অ্যাম্বাসেডর স্যুটে’ অবস্থান করেন। এই অ্যাম্বাসেডর স্যুটের ভাড়া হিসেবে একেকটা স্যুটের জন্য প্রতিদিন গুনতেন এক লাখ ৫৮ হাজার টাকা। গত ২৩ এপ্রিল থেকে দুবাইয়ের সেই ট্যুরে পরীর সঙ্গে ছিলেন তার ব্যক্তিগত সহকারী আশরাফুল ইসলাম ওরফে দিপু। দু’জনই ছিলেন আলাদা স্যুট-এ।
তার এমন প্রমোদ ট্যুরের তথ্য এখন গোয়েন্দারাদের হাতে। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, যারা চিত্রনায়িকা পরী এবং মডেল মাহবুব ফারিয়া পিয়াসাকে নিয়ে বিভিন্ন সময় প্রমোদ ট্যুরে গিয়েছেন, তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত ১০ জনের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা। তাদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, পরী সিন্ডিকেট রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পার্টির নামে সেক্স ও মাদকের আসর বসাতেন। পার্টির এক পর্যায়ে তারা টার্গেট করা ব্যক্তিদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন সুন্দরী রমণীদের। এই সুন্দরীদের নিয়ে আলাদা কক্ষে একান্তে সময় কাটানোর বন্দোবস্ত থাকত। আর অতি গোপনে এসব দৃশ্য বিশেষ টেকনোজির মাধ্যমে ধারণ করতেন পরী সিন্ডিকেটের সদস্যরা। পরবর্তীতে চলত ব্ল্যাকমেলিং।
দফায় দফায় হাতিয়ে নেওয়া হতো মোটা অঙ্কের টাকা। তাদের মাধ্যমে তদবির করে তারা অনেককে পাইয়ে দিত বড় বড় কাজের কন্ট্রাক্ট। সামাজিক মর্যাদার ভয়ে ভুক্তভোগীরা মুখ খোলার সাহস করতেন না। অসহায়ের মতো তাদের আবদারের বাইরে যেতে পারতেন না তারা। পরীর বেশিরভাগ পার্টির আয়োজনের দায়িত্বে থাকতেন নজরুল ইসলাম রাজ এবং তার কথিত মামা দিপু। আর পরীর সঙ্গে বিভিন্ন প্রভাবশালীর ট্যুরের আয়োজন করতেন চয়নিকা চৌধুরী।