কুষ্টিয়ার মিরপুরে ১৪৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, মডেম ও সিমসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম বিতরণ করা হলেও তা শিক্ষার্থীদের কোন কাজে আসছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরঞ্জাম গুলো অধিকাংশ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ প্রভাবশালী শিক্ষকদের বাড়িতে তাদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। এতে ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
উপজেলা শিক্ষা অফিস বলছে, শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণের পাশাপাশি সহজ পাঠদানের লক্ষ্যে ল্যাপটপের সহযোগিতায় বড় পর্দায় প্রজেক্টরের মাধ্যমে পাঠদান তুলে ধরতে এসব সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে সরকার। এই উপজেলায় ১৪৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।এরমধ্যে ১৪১টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ল্যাপটপসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম রয়েছে। ১২টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুমও রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক ও অভিভাবকরা বলছে,
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। করোনাকালেও সরকারীভাবে বিতরণকৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম শিক্ষার্থীদের কোনো কাজে আসছে না। স্কুলের ল্যাপটপ এখন বিদ্যালয়ের প্রভাবশালী শিক্ষকদের বাড়িতে। তাদের সন্তানের গেম খেলার কাজে ব্যবহার হচ্ছে এসব সরঞ্জাম। ফলে করোনাকালে শিক্ষকদের মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস করাতে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ল্যাপটপ দিয়ে ক্লাসের কার্যক্রম পরিচালিত হলে এমন সমস্যা হতো না। অন্যদিকে বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক ও সরঞ্জামাদি থাকার পরেও মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নেওয়া তেমন একটা হচ্ছে না এখানে। ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আমাদের সন্তানরা। শিক্ষকদের এমন কর্মকান্ডে ক্ষোভ-প্রকাশ করেছেন তারা।
মিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদ রানা বলেন,স্কুলের ল্যাপটপ ও সরঞ্জাম নিয়ে কেউ ছিনিমিনি করলে ছাড় দেওয়া হবে না। এটা আমার জানা ছিল না। লিখিত অভিযোগ পেলেই ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মিরপুর উপজেলা নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক নজরুল করিম বলেন,খুবই দুঃখজনক বিষয়টি।
শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করছে। আর সেই গুলো কতিপয় শিক্ষকরা দখল করে তাদের সন্তানের গেম খেলার কাজে ব্যবহার করবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। অভিযুক্তদের কাছ থেকে
সরঞ্জাম গুলো দ্রুত উদ্ধার করা হোক। শুধু তাই নয়,এমন কাজের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তবিবুর রহমান বলেন,এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে তার কোন ছাড় নেই।
অভিযোগ পেলেই সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।