ফুটবলের বহু ইতিহাসের সাক্ষী মারাকানায় আজ দুই প্রান্তে দুই রূপ। এক প্রান্তে আর্জেন্টাইনদের জয়োৎসব, অন্যপ্রান্তে ব্রাজিলিয়ানদের কান্না। অধিনায়ক লিওনেল মেসিকে শূন্যে ছুড়ে আনন্দ করছেন তার সতীর্থরা, অন্যদিকে কান্নায় ভেঙে পড়া ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমারকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন তার সতীর্থরা। কিছুক্ষণ আগেই যে নেইমারের ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতে নিয়েছে মেসির আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টাইনদের বাধাভাঙা আনন্দের কারণ দীর্ঘ ২৮ বছরের খরা কাটিয়ে অবশেষে কোপা আমেরিকার শিরোপা জয়ের সাফল্য। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে মহাদেশীয় শিরোপা জেতে আলবিসেলেস্তেরা, যখন মেসির বয়স ছিল মাত্র ছয় বছর। এরপর বর্নাঢ্য ক্যারিয়ারে সবকিছু অর্জন করলেও জাতীয় দলের হয়ে বড় কোনো শিরোপা জিততে পারছিলেন না মেসি। এবার মারাকানায় মেসি ও আর্জেন্টিনার দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হলো। আর নেইমারের অপেক্ষা বাড়ল। প্রজন্মের সেরা ব্রাজিলিয়ান তারকা জাতীয় দলের হয়ে কোপা কিংবা বিশ^কাপ কোনোটিই জিততে পারেননি।
যদিও এই অর্জনের জন্য উইঙ্গার অ্যাঞ্জেল দি মারিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে পারেন মেসি। ম্যাচের ২১ মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে রদ্রিগো দি পলের দেয়া লং পাসে বল রিসিভ করে দুর্দান্ত লবে গোল করেছেন পিএসজি তারকা। বলকে আলতো টোকায় আগুয়ান ব্রাজিলিয়ান গোলকিপার এদেরসনের মাথার ওপর দিয়ে জালে জড়িয়েছেন তিনি। ঘটনাবহুল ম্যাচে এই গোলটিই ফল নির্ধারণ করে দেয়।
এর আগে ১৯৯৩ সালে সর্বশেষ কোপার শিরোপা জয় করে আর্জেন্টিনা। ২০০৭, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কাছাকাছি গিয়ে সফল হয়নি আলবিসেলেস্তেরা। ২০০৭ সালে ব্রাজিলের কাছে ও সর্বশেষ দুবার চিলির কাছে ফাইনালে হেরে যায় আর্জেন্টিনা। চতুর্থ ফাইনালে শিরোপার স্বাদ পেলেন মেসি। গোল পরিশোধের প্রাণান্ত চেষ্টা করেছে স্বাগতিক ব্রাজিল। ৫২ মিনিটে রিচার্লিসনের গোলে স্তব্ধতা ভেঙে জেগে ওঠে মারাকানা, যদিও অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল করেন রেফারি। দুই মিনিট পর রিচার্লিসনের আরেক কোনাকুনি শট দুর্দান্তভাবে সেভ করেন আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। ৮৮ মিনিটে গোল মিস করেন মেসি। শেষ দিকে বক্সের মধ্যে জটলা থেকে নেয়া শটও অবিশ^াস্য ক্ষিপ্রতায় সেভ করেন সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে জয়ের নায়ক মার্তিনেজ।
এ জয়ে ১৫টি কোপা শিরোপা জিতে যুগ্মভাবে শীর্ষে উঠল আর্জেন্টিনা। উরুগুয়েরও সমান ১৫টি কোপা আমেরিকা শিরোপা। ব্রাজিল জিতেছে ৯ বার।