শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সংবাদ শিরোনাম
কুষ্টিয়ার মিরপুরে ৪৪০ বস্তা অবৈধ সার জব্দ অবৈধ ফিটনেস বিহীন ট্রলির ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়ে অঙ্গহানীর শঙ্কায় -বাসার মিরপুরে স্কুলে অগ্নিসংযোগ ও প্রধান শিক্ষককে হত্যা চেষ্টা মামলায় ০৫ জন পলাতক আসামি গ্রেফতার। নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে ফায়দা হাসিলের অপতৎপরতা চালাচ্ছে: সাবেক এমপি শহীদুল ইসলাম আমি নেতৃত্ব দিয়েই কুষ্টিয়া থানা ভাঙছি’ এটা আমার আবেগী বক্তব্য -মাজেদ দৌলতপুরের ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক বহিষ্কার শিক্ষক লাঞ্ছিত হলে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘোষনা বৈষম্য বিরোধীদের চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০ আমার নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করলে পুলিশে ধরিয়ে দিন -মাজেদ কুমারখালি দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ আহত ৫
ঘোষণা:
পরিবর্তনের অঙ্গীকারে আপনাকে স্বাগতম। সময়ের বহুল প্রচারিত বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য  ভিন্নধারার নিউজ পোর্টাল "পরিবর্তনের অঙ্গীকার"। অতি অল্প দিনে পাঠক নন্দিত হয়ে উঠেছে। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের লক্ষে কাজ করছে এক ঝাঁক তরুণ, মেধাবী ও অভিজ্ঞ সংবাদকর্মী। দেশ-বিদেশের সকল খবরাখবর কারেন্ট আপডেট জানাতে দেশের জেলা, উপজেলা এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সংবাদ প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে।  ছবিসহ জীবন বৃত্তান্ত (সি ভি)পাঠাতে হবে। ই-মেইল: khalidsyful@gmail.com , মোবাইল : ০১৮১৫৭১৭০৩৪

শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি ১৩ জেলায়

Reporter Name / ১৯৬ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম : সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১, ২:৪৯ অপরাহ্ন

খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকার পশ্চিম টুটপাড়ার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব জহর আলীর করোনা শনাক্ত হন সাতদিন আগে এরপর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে ভর্তির জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চেষ্টা চালান ছেলে জাহিদুল। চারদিন ঘুরেও শয্যা সংকটের কারণে বাবাকে ভর্তি করতে পারেননি তিনি। পরে এক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে বাড়িতে অক্সিজেন সিলিন্ডার এনে জহর আলীর চিকিৎসা শুরু হয়।

গত সপ্তাহে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা চিকিৎসায় নির্ধারিত ১৩০টি সাধারণ শয্যার বিপরীতে আড়াই শতাধিক রোগী ভর্তি ছিলেন। ফলে জহর আলীর মতো অনেকেই ভর্তি হতে না পেরে ফিরে গেছেন। এখনো একই অবস্থা হাসপাতালটির।

বিভাগের উচ্চসংক্রমণের জেলা কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত ১৯০টি শয্যার বিপরীতে গতকাল আড়াই শতাধিক রোগী ভর্তি ছিলেন। শুধু গতকালই নয়। সপ্তাহজুড়ে জেলার হাসপাতালটিতে শয্যার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন সংকটাপন্ন রোগীদের জন্য জরুরি চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। জেলাটিতে সর্বশেষ সংক্রমণ শনাক্তের হার ৪১ শতাংশের বেশি।

শুধু খুলনা বা কুষ্টিয়া নয়, দেশের এক-চতুর্থাংশ জেলায় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে করোনার জন্য নির্ধারিত শয্যার বিপরীতে বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। দেড় মাস ধরে দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সংকট দেখা দিয়েছে শয্যা না পেয়েও ভর্তি হওয়ায় সংকটাপন্ন রোগীদের জরুরি চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত লোকবলের সংকটও প্রকট হচ্ছে। এ অবস্থায় রোগীদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।

যেমন গত শুক্রবার রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ১৩ ঘণ্টায় বগুড়ার করোনা বিশেষায়িত সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে সাতজন কভিড পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ হাসপাতালটিতে নির্ধারিত ২০০ শয্যার বিপরীতে ২৫০-এর বেশি রোগী ভর্তি ছিলেন। সংকটাপন্নদের অনেকেই শয্যা পাননি হাসপাতালটিতে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ চালু করা হলেও সব শয্যায় হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা সংযুক্ত করা হয়নি। আইসিইউ ইউনিটেরও সব শয্যায় হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা নেই। এর বাইরে ভর্তি আড়াই শতাধিক রোগীকে রি-ব্রিদার মাস্ক দিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হচ্ছে। জেলার আরেক করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও শয্যার তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি। রোগী বৃদ্ধির ঊর্ধ্বমুখী হারে এ সংকট আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশের সরকারি ও বেসরকারি ১৩১টি হাসপাতাল করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছে এর মধ্যে কয়েকদিন ধরে দেশের ১৩ জেলায় করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার চেয়ে ৩৩ শতাংশ রোগী বেশি ভর্তি হয়েছেন। জেলাগুলো হলো কুমিল্লা, রংপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, রাজশাহী, বগুড়া, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, খুলনা, কুষ্টিয়া, বরিশাল, মেহেরপুর ও পিরোজপুর। তবে দেশে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালে শয্যার ৪৬ শতাংশ খালি রয়েছে।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. হাবিবুল আহসান তালুকদার জানান, বিভাগে চিকিৎসা সংকট আরো বাড়তে পারে শয্যার তুলনায় রোগী বাড়লে জরুরি সেবা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। কেননা শয্যার বিপরীতে জরুরি সেবার সুবিধা যুক্ত থাকে। এমন অবস্থায় সংকটাপন্ন রোগী বাড়লে সবাইকে সমান চিকিৎসা দেয়া যায় না। তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতাল থেকে কোনো রোগীকেই ফিরিয়ে দেয়া হয় না। যেভাবেই হোক তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়। তবে শয্যার তুলনায় রোগী দ্বিগুণ থাকলে জরুরি অক্সিজেনসহ অন্যান্য সেবা দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

সংকটের কথা বিবেচনা করে এসব জেলার নির্ধারিত সরকারি হাসপাতালগুলোয় শয্যা সংখ্যা বাড়াতে কাজ করছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ।-তবেতাতেওসংকটমোকাবেলা করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার  বলেন, এ হাসপাতালে ১৩০টি শয্যায় করোনা রোগীদের সংকুলান না হওয়ায় আরো প্রায় ১০০ শয্যা বাড়ানো হয়েছে। তবে তাতেও চিকিৎসার জন্য আসা রোগীদের সবাইকে শয্যা দেয়া যাবে না বলে মনে করছেন হাসপাতালটির কর্মকর্তারা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম  বলেন, আমরা ওইসব হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর জন্য কাজরছি। তবে শয্যা বাড়ালেই হবে না, লোকবলও বাড়াতে হবে। আমরা চিন্তা করছি, এখন মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ থাকায় এসবের প্রভাষকদের চিকিৎসাসেবায় অন্তর্ভুক্ত করব। শিগগিরই একটা নির্দেশনা আমরা জারি করে দেব। একই সঙ্গে যেসব অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ও হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা কিনেছিলাম, তা বিতরণ করা শেষ। আরো কেনার চেষ্টা চলছে।

দেশে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছেন ১ লাখ ১১ হাজার ২০ জন। এর মধ্যে মাত্র ৬ দশমিক ৯২ শতাংশ সরাসরি চিকিৎসা পাচ্ছেন, যারা মূলত সংকটাপন্ন। বাকি ৯৩ শতাংশ বাড়িতে অবস্থান করছেন। তারা কোথায় ও কীভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তা সরকারি নজরদারিতে নেই তবে পাঁচ হাজার রোগী সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিরা মূলত বিদেশফেরত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন,নজরদারির বাইরে থাকা এসব রোগী বাহক হিসেবে কাজ করছেন। যথাযথভাবে আইসোলেশন না মানা, সঠিক চিকিৎসার আওতায় না আসাসহ নানা কারণেতারা সংক্রমণ

বাড়াচ্ছেনতবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যন্ত তালিকা অনুযায়ী সক্রিয় রোগীদের পর্যবেক্ষণের চেষ্টা চলছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে প্রস্তুত করা হয়েছে। একই সঙ্গে টেলিমেডিসিন সেবার পরিধিও বাড়ানো হয়েছে।

করোনা নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে সব রোগীকে পর্যবেক্ষণে আনার বিকল্প নেই উল্লেখ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক  বলেন, যারা হাসপাতালে যাবেন না, সেসব সক্রিয় রোগীর জন্য সরকার কৌশগত পরিকল্পনা করতে পারেনি। ফলে তারা সংক্রমণের বড় বাহক হয়েছেন। ডব্লিউএইচও করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য জনগণকে সচেতন করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত করার কথা বলছে উল্লেখ করে এ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, সরকার ভুল পরিকল্পনায় ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেহেতু আমাদের সবাইকে চিকিৎসা দেয়ার সামর্থ্য নেই, তাই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

(প্রতিবেদনটিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন খুলনা প্রতিনিধি শুভ্র শচীন ও বগুড়া প্রতিনিধি এইচ আলিম) 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো সংবাদ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর