প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৯৫ সালে বেইজিংয়ে নারীদের নিয়ে চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বনেতারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা এখনও পূরণ হয়নি। এখনো নারী সংসদ সদস্যের সংখ্যা ২৫ শতাংশ এবং কর্মশক্তি হিসেবে নারীর অংশগ্রহণ ৩১ শতাংশেরও কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাহসী নীতিগত ব্যবস্থা গ্রহন এবং সম্মিলিত পদক্ষেপের মাধ্যমে আমাদের অবশ্যই এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৫ সালে বেইজিংয়ে বিশ্ব সম্প্রদায় নারীর ক্ষমতায়নের জন্য সাহসী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে এইসব প্রতিশ্রুতির অনেকগুলোই অসম্পূর্ণ থেকে গেছে।’
শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার জেনারেশন ইক্যুয়ালিটি ফোরাম ২০২১, প্যারিস আয়োজিত ‘লিঙ্গ সমতার জন্য প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন’ শীর্ষক অ্যাকশন কোয়ালিশনে প্রদত্ত পূর্বে ধারণকৃত ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈশি^ক রাজনীতি, অর্থনীতি এবং শ্রম ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ উৎসাহব্যঞ্জক নয়। আজ পর্যন্ত মাত্র ২৫ শতাংশ সংসদ সদস্য নারী, যদিও শ্রম ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ পুরুষদের তুলনায় এখনও ৩১ শতাংশ কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাহসী নীতিগত ব্যবস্থা গ্রহন এবং সম্মিলিত পদক্ষেপের মাধ্যমে আমাদের অবশ্যই এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে হবে।
নারীর ক্ষমতায়ন তাঁর সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প কার্যত নারীদের তথ্য প্রযুক্তি খাতে অন্তর্ভূক্তিমূলক।’
তিনি বলেন, তাঁর সরকার আইটি পেশাদার এবং দক্ষ উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যবহারিক প্রকল্প চালু করেছে। নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশে বিভিন্ন ডিজিটাল সফটওয়্যার ব্যবহৃত হচেছ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাইবার প্ল্যাটফর্মগুলোতে নারীদের বর্ধিত সুরক্ষার দিকে পরিচালিত করতে গত তিন বছরে ৭১ হাজার নারীকে সাইবার সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বেইজিং সম্মেলনের ২৫তম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এর পূর্বের প্রতিশ্রুতির ধারাবাহিকতায় এই সময় আইসিটি ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ প্রযুক্তিগত স্টার্ট-আপস এবং ই-বাণিজ্য খাতকে ২০২৬ সাল নগাদ ২৫ শতাংশে উন্নীত করার এবং ২০৪১ সাল নাগাদ ৫০ শতাংশে উন্নীত করার প্রতিশ্রতি দেন।
প্রজন্মের সমতা (জেনারেশন ইক্যুয়ালিটি) ফোরামটি ৩০ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত দ’ুটি ইভেন্ট জুড়ে চলছে যা মেক্সিকো সিটিতে শুরু হয়েছিল এবং প্যারিসে শেষ হবে। জেনারেশন ইক্যুয়ালিটি ফোরাম লিঙ্গ সমতার জন্য ইউএন উইমেন-এর আহ্বানে মেক্সিকো এবং ফ্রান্স সরকারের যৌথভাবে আয়োজিত একটি বিশ্বব্যাপী আন্দোলন।
ফোরাম সরকার, কর্পোরেশন, এনজিও, যুব-নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী এবং সংস্থাকে একত্রিত করে লিঙ্গ সমতার জন্য সুনির্দিষ্ট, উচ্চাভিলাষী এবং রূপান্তরকৃত প্রতিশ্রুতি সুরক্ষিত করে। এ গুলো অ্যাকশন কোয়ালিশনের তৈরি লিঙ্গ সমতার জন্য বিশ্বের রোডম্যাপ।