বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন দেশের এক হাজার ৫৫৭ জন সাংবাদিক। একইসঙ্গে তাকে স্থায়ী জামিন দেওয়ার দাবিও জানান তারা।
শনিবার এক যুক্ত বিবৃতিতে তারা এ আহ্বান জানান। বিবৃতিতে বলা হয়, খালেদা জিয়া মারাত্মক অসুস্থ। তার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ পরিস্থিতিতে তার চিকিৎসা নিয়ে কখনও রাজনীতি বাঞ্ছনীয় নয়।
সাংবাদিকরা বিবৃতিতে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বয়স এখন ৭৬ বছর। প্রবীণ বয়সেও তিনি জেলবন্দি। অবশ্য সরকারের বিশেষ অনুমতিতে শর্তযুক্ত মুক্তিতে তিনি এখন নিজ বাসভবনে অবস্থান করছেন। তবে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি অত্যন্ত অসুস্থ।
দীর্ঘ চার বছর তার যথাযথ কোনো চিকিৎসা হয়নি। কারাগারে অমানবিক পরিবেশেও তিনি অনেক নতুন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। হার্টের সমস্যা, লিভারের সমস্যা, কিডনি ও চোখের সমস্যা ছাড়াও পুরনো আর্থ্রাইটিস এবং নতুন করে কভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়া ও কভিড পরবর্তী জটিলতায় তার শারীরিক অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ব্যক্তিগত চিকিৎসক দলের প্রধান অধ্যাপক ডা. এফএম সিদ্দিকী সাংবাদিকদের কাছে তার অসুস্থতার যে বিবরণ দিয়েছেন, তা খুবই উদ্বেগজনক। আমরা মনে করি, দেশের একজন শীর্ষ রাজনীতিক, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বয়োজেষ্ঠ নাগরিক, একজন নারী হিসেবে উপরন্তু একজন জেলবন্দি ব্যক্তির যথাযথ সুচিকিৎসা পাওয়া ন্যূনতম মানবাধিকারের অংশ। তার মৌলিক অধিকার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা তাই আদালতের মাধ্যমে তাকে স্থায়ী জামিনে মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
সাংবাদিকরা আরও বলেন, খালেদা জিয়া দেশের তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে তিনি এদেশের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিএনপির মতো দেশের অন্যতম বড় এবং জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের তিনি চেয়ারপারসন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তার স্বামী জিয়াউর রহমান একজন সেক্টর কমান্ডার এবং জেড ফোর্সের প্রধান হিসেবে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি নিজেও অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করেছেন।
তারা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বহুদলীয়, গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং এদেশের উন্নয়নে খালেদা জিয়ার অসামান্য অবদান রয়েছে। ১৯৭৪ সালের বিশেষ মতা আইনে সরকার কর্তৃক সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়ায় সরকারি মতা প্রত্যাহারসহ পত্রিকার ডিকারেশন প্রাপ্তিকে সহজ করে দিয়েছিলেন। আকাশ-সংস্কৃতির দরজা খুলে দেওয়ার পাশাপাশি জাতীয় প্রেস কাবের জন্য সরকারি জমির বরাদ্দ চিরস্থায়ী করে দিয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে প্রথমবার মতায় এসে তিনি দেশের নাজুক অর্থনীতিকে কাঠামোগত নানা পরিবর্তন ও সংস্কারের মাধ্যমে চাঙ্গা করেছেন। অর্থনীতির উদারীকরণ ছাড়াও খালেদা জিয়ার আমলে নারীর মতায়ন এবং শিা বিস্তারে প্রভূত উন্নতি হয়। বিশেষ করে মেয়েদের শিা অবৈতনিক ও উপবৃত্তি দেওয়ার যুগান্তকারী কর্মসূচি তিনি চালু করেন। রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট তৈরি এবং মানুষকে স্বনির্ভর করে তুলতে নানা ধরনের আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মসূচিও তিনি চালু করেন।
তারা আরও বলেন, যমুনা সেতুর মতো বড় বড় প্রকল্প তার আমলে বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার সাফল্য এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য। রাজনৈতিক সংঘাত, অনিশ্চয়তা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ সত্ত্বেও নব্বই পরবর্তী সময়ে দেশে কখনও খাদ্য সংকট কিংবা দুর্ভি দেখা দেয়নি। দেশের সামাজিক সূচকগুলোও উন্নতি হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে বিভিন্ন পদপে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং রায়েরবাজারে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ তার আমলেই নির্মিত হয়েছে। তাই আমরা আশা করি এমন একজন দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদের সামগ্রিক অবদান এবং তার বার্ধক্যের এ কঠিন সময়ের কথা বিবেচনা করে সরকার রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে খালেদা জিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ প্রদর্শ করবে। তিনি যাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারেন, তার ব্যবস্থা করলে সরকারের এ পদপেকে দেশবাসী ইতিবাচক হিসেবেই দেখবে।
বিবৃতিতে স্বারকারীদের মধ্যে রয়েছেন, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ (সাবেক এডিটর, নিউজ টুডে, সাবেক সভাপতি, জাতীয় প্রেস কাব), আলমগীর মহিউদ্দিন (সম্পাদক, নয়া দিগন্ত), আমানউল্লাহ (সাবেক প্রধান সম্পাদক, বাসস), আবুল আসাদ (সম্পাদক, দৈনিক সংগ্রাম), শওকত মাহমুদ (সাবেক সভাপতি, জাতীয় প্রেস কাব) ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী (সম্পাদক, দৈনিক দিনকাল), মোস্তফা কামাল মজুমদার (সম্পাদক, দ্য নিউ নেশন), সালাহ উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর (ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, নয়া দিগন্ত), সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ (উপদেষ্টা সম্পাদক, বাংলাদেশ খবর), কবি আবদুল হাই শিকদার (সাংবাদিক ও কবি), এরশাদ মজুমদার (সাংবাদিক ও কবি), কামাল উদ্দিন সবুজ (সাবেক সভাপতি, জাতীয় প্রেস কাব), সৈয়দ আবদাল আহমদ (নির্বাহী সম্পাদক দৈনিক আমার দেশ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাতীয় প্রেস কাব), মাসুমুর রহমান খলিলী (উপ সম্পাদক, দৈনিক নয়া দিগন্ত), আমিনুর রহমান সরকার (সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, দৈনিক দিনকাল), এম আবদুল্লাহ (সভাপতি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন), নুরুল আমিন রোকন (মহাসচিব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন), এমএ আজিজ (সাবেক মহাসচিব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন), কাদের গনি চৌধুরী (সভাপতি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন), ইলিয়াস খান, সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেস কাব), শহিদুল ইসলাম (সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন), মুরসালিন নোমানী (সভাপতি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি), মুনশী আবদুল মান্নান (সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন), বাকের হোসাইন (সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন), জাহাঙ্গীর আলম প্রধান (সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন), মাহফুজুর রহমান (সাবেক সভাপতি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি), শাখাওয়াত হোসেন বাদশা (সাবেক সভাপতি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি), রফিকুল ইসলাম আজাদ (সাবেক সভাপতি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি), ইলিয়াস হোসেন (সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি), রিয়াজ চৌধুরী (সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি), হাসান হাফিজ (সাংবাদিক ও কবি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, জাতীয় প্রেস কাব), মাহমুদ শফিক (সাংবাদিক ও কবি), আবু সালেহ (সাংবাদিক ও ছড়াকার), আনওয়ারুল কবির বুলু (সাংবাদিক ও ছড়াকার), এনায়েত রসুল (সাংবাদিক ও ছড়াকার), মোফাখখার আনাম (প্রবীণ সাংবাদিক), কাজী রওনাক হোসেন (সম্পাদক সারগাম), বদিউল আলম (সিনিয়র সাংবাদিক), বখতিয়ার রানা (সিনিয়র সাংবাদিক), নুরুল হাসান খান (সিনিয়র সাংবাদিক), নুরুদ্দিন আহমেদ (সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন), একেএম মহসিন (সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন), এনাম আবেদীন (সিনিয়র সাংবাদিক), মমতাজ বিলকিস বানু (সিনিয়র সাংবাদিক), রোজী ফেরদৌস (সিনিয়র সাংবাদিক), মাহমুদা চৌধুরী (সিনিয়র সাংবাদিক), জাহেদ চৌধুরী (নগর সম্পাদক, দৈনিক আমার দেশ), আবদুল আউয়াল ঠাকুর (সিনিয়র সাংবাদিক), হাসান শরীফ (সিনিয়র সাংবাদিক), আলাউদ্দিন আরিফ (সাধারণ সম্পাদক, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন), মোদাব্বের হোসেন (সিনিয়র সহ-সভাপতি, বিএফইউজে), রাশিদুল ইসলাম (সহ-সভাপতি, বিএফইউজে), ওবায়দুর রহমান শাহিন (সহ-সভাপতি, বিএফইউজে), শাহীন হাসনাত (সহ-সভাপতি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন), বাছির জামাল (সহ-সভাপতি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন), রাশিদুল হক (সহ-সভাপতি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন), নির্মল চক্রবর্তী (সিনিয়র সাংবাদিক), মোহন হাসান (সিনিয়র সাংবাদিক), আলী মামুদ (সিনিয়র সাংবাদিক), ফখরুল আলম কাঞ্চন (সিনিয়র সাংবাদিক), আনোয়ার আল দীন (সিনিয়র সাংবাদিক), খুরশিদ আলম (সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন), লোটন একরাম (সিনিয়র সাংবাদিক), শফিউল আলম দোলন (সিনিয়র সাংবাদিক), দিদারুল আলম (সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন), আতিকুর রহমান রুমন (সিনিয়র সাংবাদিক), মাহমুদুর রহমান সুমন (সম্পাদক, দেশ বর্তমান), শামসুল হক হায়দরী (সভাপতি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন), মোহাম্মদ শাহানেওয়াজ (সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন), সরদার আবদুর রহমান (সভাপতি, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন), মুহাম্মদ আবদুল আউয়াল, (সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন), মো. আনিসুজ্জামান (সভাপতি, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন, খুলনা), আবুল হাসান হিমালয় (সাধারণ সম্পাদক, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনা), এম আইউব, (সভাপতি, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর), আকরামুজ্জমান (সাধারণ সম্পাদক, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর), মীর্জা সেলিম রেজা, (সভাপতি, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া), গণেশ দাস (সাধারণ সম্পাদক, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া), মমতাজ উদ্দিন বাহারী (সভাপতি, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার), মোহাম্মদ আনছার উদ্দিন (সাধারণ সম্পাদক, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার), রমিজ খান (সভাপতি, কুমিল্লা জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন), মো. আবদুল জলিল ভূঁইয়া (সাধারণ সম্পাদক, কুমিল্লা জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন), মো. মাহফিজুল ইসলাম রিপন (সভাপতি, সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুর), আতিউর রহমান (সাধারণ সম্পাদক, সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুর), আবদুর রাজ্জাক বাচ্চু (সভাপতি, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়ন), এম আইয়ুব আলী (সভাপতি, সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহ), সাইফুল ইসলাম (সাধারণ সম্পাদক, সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহ), এইচএম দেলোয়ার (সভাপতি, সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুর), মো. হেদায়েত উল্লাহ (সাধারণ সম্পাদক, সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুর) প্রমুখ।