এই ঘটনায় ঝিনাইদহ জেলার শালিয়া গ্রামের উম্বাদ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ইবি থানায় একটি মামলা করেন। উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিরা পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামী একই গ্রামের আজবাহার মন্ডলের ছেলে জনি মন্ডল (২২), আলম বিশ্বাসের ছেলে সুমন বিশ্বাস (২১), হামজা মন্ডলের ছেলে রিংকু মন্ডল (২২), লুকমান মন্ডলের ছেলে তুহিন মন্ডল (২০)।
মামলার বাদী জাহাঙ্গীরের চাচতো ভাই ইমরান জানান, বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৫টার সময় আমার ভাই জাহাঙ্গীর পশ্চিম আব্দালপুর বাজার যাওয়ার পথিমধ্যে ঢেকির মোড় থেকে পলাতক আসামী জনি মন্ডল কথা বলার জন্য আমার ভাইয়ের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি চেয়ে নেয়। পরবর্তীতে কথা বলতে বলতে বাজারের দিকে যায়। আমার ভাইও তার সাথে সাথে যায়। বাজার থেকে জনি আমার ভাইকে ডেকে স্কুলের শহীদ মিনারের কাছে নিয়ে যায়। শহীদ মিনারের কাছে গিয়ে দেখতে পায় ওই সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান রাকিবুল ইসলাম সোহাগ, সুমন বিশ্বাস, রিংকু মন্ডল, তুহিন মন্ডল সহ অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জন দাড়িয়ে রয়েছে। আমার ভাইকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে মারতে মারতে হাইস্কুল মাঠের শহীদ মিনারের পিছনে পানের বরজের মধ্যে নিয়ে যায় এবং ৫ হাজার টাকা দাবী করে। টাকা দিতে রাজী না হওয়ায় সন্ত্রাসীরা ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেবে বলে চর-থাপ্পর ও কিল-ঘুষি মারতে থাকে। ভাই জাহাঙ্গীরের ব্যবহৃত ০১৭৪৮-২১০৫০১ থেকে আমার (ইমরান) ০১৯৫৩-৪০৮০৩৩ নাম্বারে ফোন দিয়ে ইবি থানার পুলিশ পরিচয় দিয়ে ৫ হাজার টাকা দাবী করে। আমি (ইমরান) পশ্চিম আব্দালপুর জাহিদের বিকাশের দোকান থেকে সন্ত্রাসীদের ০১৭৭৬-১৫০০২৫২ নাম্বারে বিকাশ করি। বিকাশ করার পর আসামীরা পূনরায় আবারো আমার ভাই জাহাঙ্গীরের নিকট টাকা চায়। সেসময় আমি স্থানীয় জনতা ও আব্দালপুর পুলিশ ক্যাম্পের টু আইসি এসআই আশরাফের সহযোগিতা নিই। তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে টুআইসি এসআই আশরাফ রাকিবুল ইসলাম সোহাগ ওরফে এনাকোন্ডা কে আটক করেন এবং জনি সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ইতিপূর্বেও কুষ্টিয়াতে নারীর শ্লীলতহানীর চেষ্টাকালে সোহাগ ও তুহিনের ভ্রাম্যমান আদালতে জেল হয়।
এলাকাবাসী জানায়, সোহাগ, তুহিন, জনি এই এলাকায় বিশাল একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। তারা এলাকায় মেয়েদের উত্তাক্ত, মাদক ব্যবসা, সেবন, ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাইনা। একটি প্রভাবশালী চরমপন্থী গ্রুপের ছত্রছায়ায় থেকে এই সন্ত্রাসী বাহিনী নানান অপকর্ম করে আসছে।
একটি সুত্র জানায়, গত বুধবার শান্তিডাঙ্গা বাস ষ্টান্ডে মিলনের বাড়ীতে রাত আনুমানিক ২ টার সময় ডাকাতি সংঘটিত হয়। ডাকাত দল মুখে কালো কাপর বেধে অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মিলনের বাড়ি থেকে নগদ ২ লক্ষ টাকা, স্বর্ণাঙ্কার লুট করে নেয়। এছাড়াও শান্তিডাঙ্গা ঝন্টুর বাড়ী ডাকাতি, পিয়ারপুর আলী হোসেন মেম্বারের বাড়ীতে ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে।
এই ব্যাপারে ইবি থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান রতনের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, পশ্চিম আব্দালপুরের রাকিবুল ইসলাম সোহাগ এর সন্ত্রাসী বাহিনী অপহরণ করে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদার দাবী করে। পুলিশ তাৎক্ষনিক একজনকে আটক করে। বাকীরা পালিয়ে যায়। থানায় এই ঘটনায় জাহাঙ্গীর বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। অপহরণ, চাঁদাবাজী সহ বিভিন্ন ধারায় এই মামলা হয়েছে। বাকী আসামীদের আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।