ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসুন্ধি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা (অবঃ) সেনা সদস্য মোঃ হাফিজুর রহমানের জমি দখল, গ্রাম থেকে উচ্ছেদের পায়তারা ও চাঁদাবাজি মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি এবং ষড়যন্ত্রমূলক মানববন্ধনের প্রতিবাদে ঝিনাইদহে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি। মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব মিলনাতনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।মুক্তিযোদ্ধার কন্যা শাহানাজ পারভিন সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার পিতা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ্য অবস্থায় আমার মাকে নিয়ে গ্রামে একা থাকেন। আমরা তিন বোন বিয়ের পর স্বামীর সংসার করছি। আর একমাত্র ভাই ঢাকায় চাকুরীরত। ফলে আমার অসুস্থ্য পিতা-মাতাকে নিয়ে একা বাড়ীতে থাকার সুযোগে গ্রামের চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক মধু মোহন ও উৎপল, আমাদের বসত ভিটা থেকে মধু মোহন জমি দখল নিতে না পেরে আমার পিতার নিকট ৫ লক্ষ টাকার চাঁদা দাবী করে।চাঁদা না দিলে ঘর বাড়ি ভেঙ্গে আমাদের গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করে দিবে হুমকি দেয়। পরে আমার পিতা ০৬/০৪/২০২১ তারিখে কোর্টে একটি চাঁদাবাজি মামলা করে, যাহার জি আর মামলা নং- ২১২/২২১। আসামীরা পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পর গত ২০/০৫/২১ তারিখে দুপুর বেলা উক্ত মামলার সহযোগী হালিম, কামাল, জসীম, সোনালী, জায়েদ, রেজাউল, ইবরা এদের নেতৃত্বে আনুমানিক ১০০/১৫০ জন লোক আমাদের বসত ভিটা ঘেরাও করে আমার পিতা মাতাকে মারতে আসে এবং আমার পিতার নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করা সহ দায়ের কৃত মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেয়।সেসময় আমাকে ও আমার ভাইকে খুন জখম করা সহ বাড়ী ঘর লুট পাটের ভয়ভীতি দেখায়। এরপর অন্য জায়গা থেকে লোক ভাড়া করে এনে মানব বন্ধনের নামে আমার মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে মিথ্যা কথা বলে বিভ্রান্ত করা সহ সম্মানহানী করে। গ্রামের মানুষদের বোঝাচ্ছে যে তারা কতটা ক্ষমতাশালী এবং আমার পিতা সহ আমাদের নাম ধরে মাইকিং করে চাপ সৃষ্টি করা মানে আমরা যাতে মামলা তুলে নিই। আমরা কেউই আইনের উর্ধ্বে নই। আমরা যদি মিথ্যা মামলা করি তাহলে এগুলোকি যবর দখলের ধারা বাহিকতায় ২৫৮ নং মৌজায় ফুরসুন্ধি আমার দাদার জমি যাহার দাগ নং- ৪৬২, কামাল কাজী ভোগ দখল করে আছে, ২৫১ নং দাগটি কহিনুর ভোগ দখলে রেখেছে, ২৪২ নং দাগ আমেনার দখলে, ২৩৮ নং দাগ আছে হাসান ও মসলেমের দখলে, ৩৬৩ নং দাগ থেকে ৭০ হাজার টাকার গাছ বিক্রি করেছে হালিম ও রেজাউল। এই সব দাগের জমিগুলো আমি গত ০৫/০৬/২১ তারিখে আমিন নিয়ে মাপা মাপি করি উক্ত ব্যক্তিরা জমির মাপ মেনেও নেয় এবং আমরা জমিতে খুটি পুতে আসি।জমি মাপার ৪ দিন পর মাইকিং এ শুনি অন্য কথা। ১০/০৫/২১ তারিখে দেখি আবার আমাদের উক্ত জমির উপর পূর্বের ন্যায় ইচ্ছামত রাস্তা ও ঘর নির্মাণ করেছে। উক্ত আসামীরা জামিনে এসে তাদের সহযোগী জসীম, হালিম, রেজাউল, কামাল, ইবরা ও সোনালী এরা জমি দখলদারদের বলেছে এই জমিতে আসলে মার পিট করে হাত-পা ভেঙ্গে দিবি। আমার পিতা একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে শেষ বয়সে এই প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের চাপাচাপিতে মারা যায় তাহলে এই লজ্জা পুরো বাঙ্গালি জাতির।একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা (অবঃ) সেনা সদস্য হয়েও আমার পিতাকে অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন ও অপমানের শিকার হতে হচ্ছে। ভূমিদস্যুরা তার জমি যবর দখল করে নিচ্ছে, প্রভাব খাটিয়ে আমার পিতার সম্পত্তি নিজেদের নামে রেকর্ড করে নিয়েছে অনেকে। আমার একমাত্র ভাই গ্রামে আসতে পারেনা।আমার শরীরে এক বৃন্দ রক্ত থাকতেও আমার পিতার উপর অন্যায়, নির্যাতন, অসম্মান সহ্য করবোনা। আমার পিতা সেনা গেজেটে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।তিনি আরও বলেন, এ বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম।