হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের মন্দাকিনী এলাকার আলোচিত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সরোয়ার আজমের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন আকদ হওয়ার কথা ছিল আজমের। হবু বধূর সাথে কথা বলার জন্য দোকানে থাকে আজম। এবার সুযোগ পায় ঘাতক বড় ভাই। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পরিকল্পনা করে বড় ভাই গোলাম সরওয়ার।
হত্যাকাণ্ডের দিন রাত ৯টার সময় ঘর থেকে ছোট ভাইয়ের জন্য ভাত নেওয়ার সময় তরকারিতে মিশিয়ে দেয় ইঁদুর মারা বিষ ও ঘুমের ওষুধ। তখন দোকানে মানুষ আর কাজে ব্যস্ত থাকায় যথাসময়ে ভাত খাওয়া হয়নি আজমের। এরপর ঘরে চলে যায় বড় ভাই সরওয়ার। তারপর ঘরে গিয়ে সাড়ে দশটা ১১টার দিকে ঘাতক বড় ভাই মোবাইল ফোনে জিজ্ঞেস করে আজম ভাত খেয়েছে কি না। তিনি রাতের খাবার খেয়েছে বলে তার বড় ভাইকে জানায়। রাতের খাবার খেয়েছে বলার পর তার বড় ভাই সরওয়ার দোকানে এসে আজমকে ডাকতে থাকে।আজম দোকান খোলার পর অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। এবার তাকে গালিগালাজ করে দেখল আজম চেতনা আছে কি না। সরওয়ার যখন বুঝতে পারে ইঁদুর মারা বিষ ও ঘুমের ওষুধে কাজ হয়েছে। এবার ছুরি দিয়ে তাকে জবাই করে দেয় ঘাতক বড় ভাই সরওয়ার। এরপর সে দোকানের ভিতর থেকে সার্টারের দুইটা নাট খুলে রাখে এবং বের হয়ে তালা ও নাট লাগিয়ে দেয়। এরপর ঘরে চলে যায়।
সকালে যখন আজম ঘুম থেকে উঠেনি তখন পাশের চায়ের দোকানে বসে থাকা মানুষগুলো তাদের বাড়িতে খবর দেয়। এমন খবর শুনে ঘাতক সরওয়ার, চাচাতো, ফুফাতো ভাইসহ এলাকার মানুষ এসে দোকানের উপরে টিন খুলে ভিতরে প্রবেশ করার পর আজমকে গলা কাটা দেখে চিৎকার করে। তারপর বড় ভাই সরওয়ার আগে গিয়ে লাশের পাশে থাকা কিরিচটা স্পর্শ করে কারণ সে জানত সেটাতে তার আঙ্গুলের চাপ আছে। যদি না ধরে তাহলে তাতে লেগে থাকা তার আঙ্গুলের ছাপ থেকে তাকে সন্দেহ করা হতে পারে। তাতেই আটকে যেতে পারে সে। তাই সে এমন পরিকল্পনা করে।
কিন্তু এত সূহ্ম পরিকল্পনার পরও শেষ রক্ষা হয়নি আজমের ঘাতক বড় ভাই সরওয়ারের। গোলাম সরওয়ারকে গত মঙ্গলবার (১৪ জুন) আটক করা হয়। আটকের পর আসামী ভাইকে হত্যার কথা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে বলে জানিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমে এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।