বক্সের ২৯ মিটার দূর থেকে অবিশ্বাস্য এক ফ্রিকিক গোল করে লিওনেল মেসি উদযাপনটা করলেন ফুটবল ঈশ্বর ম্যারাডনার মতোই। তার গোলেই লিড পায় আর্জেন্টিনা। তবে না শেষ পর্যন্ত কোপা আমেরিকার প্রথম ম্যাচ টা সুখকর হলো না আর্জেন্টিনার। চিলির সঙ্গে শেষ পর্যন্ত পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তারা। দ্বিতীয়ার্ধে এডুয়ার্দ ভারগাসের গোলে শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে ড্র হয় ম্যাচটি।মঙ্গলবার (১৫ জুন) রাতের ম্যাচে চিলির বিপক্ষে ড্র করে নিজেদের কোপা মিশন শুরু করেছে আলবিসেলেস্তেরা। ম্যাচের শুরুতে কিছুটা এলোমেলো ফুটবল খেলা আর্জেন্টিনা নিজেদের গুছিয়ে নিতে থাকে ধীরে ধীরে। কিন্তু দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের এখনকার নিয়মিত দৃশ্য ফাউল। দিন দিন যেন আরও বেশি শরীর নির্ভর হয়ে যাচ্ছে তাদের খেলা।তাতে বারবারই খেলার গতি আসছিল কমে। গোল মিসের মহড়াও অবশ্য দিয়েছে আর্জেন্টিনা। বিশেষত নিকোলাস গঞ্জালেস। দুইটি সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। প্রথমটি ছিল ১৭ মিনিটে। সহজ সুযোগ পেয়েও ক্লদিও ব্রাভোর স্রেফ হাতে তুলে দিয়েছিলেন বল।পরেরটি ৭৯ মিনিটে। মেসির বাড়ানো বলে দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন গঞ্জালেস। কিন্তু আবারও মিস করেন তিনি। আর্জেন্টিনা আগে-পরে গোল মিস করেছে আরও, মূল স্ট্রাইকার হিসেবে খেলা লাউতারো মার্টিনেজও হারিয়েছেন গোলের সুযোগ। তবে তাদের জন্য আরও একবার রক্ষা কর্তা হয়েছেন লিওনেল মেসি। গোল অবশ্য তিনি চিলির আগেই করেছিলেন।প্রথমার্ধের ৩১ মিনিটে লো সেলসোকে করা ফাউলে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। ডি বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া মেসির সেই ফ্রি কিক আটকানোর সাধ্য ছিল না ক্লদিও ব্রাভোর, বলে মাথা লাগাতে পারেননি চিলির কোনো ডিফেন্ডারও। ওই এক গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। ছিল স্বস্তিতে।কিন্তু বিরতি থেকে ফিরে কিছুটা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে চিলি। ৫৬ মিনিটে বক্সের ভেতরে টাগ্লিয়াফিকোর সঙ্গে সংঘর্ষে পড়ে গিয়েছিলেন ভিদাল। আবেদন করেন পেনাল্টির। রেফারি প্রথমে সাড়া না দিলেও ভিএআর সিদ্ধান্ত বদলায়। পেনাল্টি পায় চিলি।ভিদালের নেওয়া শট অবশ্য ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। কিন্তু ফিরতি বল ক্লিয়ার করতে ছিলেন না কোনো ডিফেন্ডার। সুযোগটা কাজে লাগান এডোয়ার্ড ভার্গাস। হেডে আর্জেন্টিনার জালে বল জড়ান তিনি। খেলায় সমতা ফিরে আসে।এরপর ডি মারিয়া, আগুয়েরোদের মতো অভিজ্ঞদের নামালেও কাজ আর হয়নি। ছিল না গোছানো আক্রমণ কিংবা ভালো কোনো পরিণতি। ম্যাচের শেষ দিকে এসে মেসি বাঁ পায়ে ভর করে ডি-বক্সের ভেতর গঞ্জালেজের উদ্দেশে বল বাড়ান কিন্তু লাফিয়ে উঠেও তিনি বল গোলবরাবর রাখতে না পারলে হতাশা বাড়তে থাকে আর্জেন্টিনার। ম্যাচের একদম অন্তিম মুহূর্তে মেসির করা হেড ব্রাভোকে পরাস্থ করলেও চিলির ডিফেন্ডার রোকো বিপদমুক্ত করলে ম্যাচে আর লিড নেওয়া হয়নি আর্জেন্টিনার। আর শেষ পর্যন্ত ওই ১-১ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় দুই দলকে। এ নিয়ে টানা তৃতীয় ম্যাচে ড্র করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে।