নির্বাচন কমিশন ৭ জুন আওয়ামী লীগসহ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে চিঠি পাঠিয়ে জানতে চেয়েছে- তারা ২০২০ সালের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সব পর্যায়ের কমিটিতে নূ্যনতম ৩৩ ভাগ সদস্যপদ নারী সদস্যদের জন্য সংরক্ষণের শর্ত পালন করছে কিনা। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী, এই তথ্য ৩০ দিনের মধ্যে জানানোর অনুরোধও করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই শর্ত পূরণ না করা হলে তা কেন হয়নি- তার ব্যাখ্যাও ৩০ দিনের মধ্যে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের এই চিঠি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তুলনামূলক বিচারে একমাত্র আওয়ামী লীগই কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সব পর্যায়ের কমিটিতে নূ্যনতম ৩৩ ভাগ সদস্যপদ নারী সদস্যদের জন্য সংরক্ষণের শর্ত পালনের বেলায় এগিয়ে রয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ ও মহিলা শ্রমিক লীগের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের শর্ত অনেকটাই পূরণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নারীর সংখ্যা ২২ ভাগ। এই কমিটিতে পাঁচটি পদ শূন্য রয়েছে। এই পদগুলোতে নারীদের আনা হলে কেন্দ্রীয় কমিটিতে নারীর সংখ্যা ২৫ ভাগ হবে। সেই সঙ্গে আগামীতে কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সব পর্যায়ে ৩৩ ভাগ নারী সদস্য আনা হবে।
কয়েকজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, মোহাম্মদ নাসিম, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ও অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরুর মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগের ১৭ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীতে তিনটি পদ শূন্য হয়েছে। আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের মৃত্যুর পর শূন্য হয়েছে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের দুটি পদ। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের শর্ত পালনের অংশ হিসেবে এই পদগুলোতে নারীদের অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী জাতীয় সম্মেলনের আগেই এটি করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যপদে তুলনামূলক বিচারে দক্ষ এবং যোগ্য নারী নেতৃত্বের কিছুটা সংকট রয়েছে।
সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে ১৩ সদস্যের সংসদীয় বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের দুই সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর চার সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্লাহ, ড. আব্দুর রাজ্জাক এবং লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান উপস্থিত ছিলেন।
হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল নিয়ে অসন্তোষ প্রধানমন্ত্রীর : আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে বৈঠকে বলা হয়েছে, বিভিন্ন কারণে এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। চিকিৎসাসেবার মান অনেকটাই কমে গেছে। বেশ কয়েক মাস ধরে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের বিষয়টি অনিয়মিত হয়ে পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে এসব বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ প্রসঙ্গে আলোচনাকালে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের এমপি ডা. হাবিবে মিল্লাতের নেতিবাচক ভূমিকা নিয়ে কথা হয়। তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। বৈঠকে জানানো হয়, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কার্যক্রমে গতি আনতে ইতোমধ্যে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে ঢেলে সাজানো হয়েছে।