দল ও পৌরসভার মেয়রের পদ থেকে বহিষ্কৃত হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। রোববার দুপুর ১২টায় ফেসবুক লাইভে এসে তিনি নিজেই এ তথ্য জানান।
কাদের মির্জা বলেন, আজকে (রোববার) আমার জীবনে হয়তো জনপ্রতিনিধি বা পৌরসভার মেয়র হিসেবে শেষ দিবস। তাই কয়েকটি কথা বলার জন্য আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা আমার কথাগুলো মনযোগ দিয়ে শুনবেন।
কাদের মির্জা বলেন, আজ (রোববার) সকাল ৯টার দিকে মোবাইলে একটা কল পেয়েছি। নোয়াখালীর একজন ত্যাগী নেতা আমাকে ফোন দিয়ে বলেছেন- নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে নাকি বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বড়ভাই সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শনিবার নাকি আমাকে বহিষ্কারের জন্য নেত্রীকে অনুরোধ করেছেন। এরপর নেত্রী নাকি ওই নির্দেশ দিয়েছেন। তবে আমি খবর নিয়ে জেনেছি ওবায়দুল কাদের নেত্রীকে বলেছেন- তাকে (ওবায়দুল কাদের) দল থেকে সরিয়ে দিতে। ওবায়দুল কাদের নাকি বলেছেন- আমি এভাবে দল ও সরকারের দায়িত্ব পালন করতে পারব না। ছোটভাই কাদের মির্জা আমাকে অপমান করেছে। নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- সেটা তোমার পারিবারিক বিষয়, তুমি দেখ।
কাদের মির্জা বলেন, এখন শুনছি আমাকে নাকি বহিষ্কার করা হয়েছে। সকালে এসব কথা জানার পর আমি পৌরসভার দাপ্তরিক সকল কাজ শেষ করেছি। নেত্রীর নির্দেশ পেলে দল এবং পৌরসভার পদ থেকে বিদায় নেব। নেত্রী ব্যস্ত মানুষ, তিনি হয়তো সময় পাবেন না, তবে সঙ্গে যারা থাকেন তাদের কেউ মেসেজ দিলেও হবে।
তিনি বলেন, দল থেকে বিদায় নিলেও পৌরসভায় একটি কক্ষে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদের অফিস করেছি। বহিষ্কারের পর সেখানে বাধা দিলে বা বসতে না দিলে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে গিয়ে শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের জয়গান গাইবো।
এসময় কোম্পানীগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদে নিজের ঘোষিত প্রার্থীদের তালিকাও বাতিল ঘোষণা করেন কাদের মির্জা।
তিনি বলেন, এ ঘোষণা দিবেন একমাত্র শেখ হাসিনা। তিনি যাদেরকে মনোনয়ন দিবেন তারা যদি যোগ্য হয় তাহলে তাদের পক্ষে কাজ করব আমি।
এদিকে বহিষ্কার হলে পৌরসভার পরবর্তী উপনির্বাচনে আবারও দাঁড়িয়ে নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করবেন বলেও জানান আলোচিত এ মেয়র। যদিও এরআগে স্থানীয় সরকারের আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে দলের ভেতরের নানা কথা বলে আলোচিত ও সমালোচিত হন কাদের মির্জা। পরে গত ৩১ মার্চ ফেসবুকে দলের সাধারণ সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণাও দেন তিনি। এরপর আবার তিনি দাবি করেন দলের হাইকমান্ড তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি তাই তিনি আবারও দলে ফিরে এসেছেন।