কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিভিন্ন কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য সরাসরি গড়াই নদীতে ড্রেনের মাধ্যমে যাওয়ার কারনে নদীর পানি বিষাক্ত হয়ে উঠেছে।এবং কারখানার কাপড় তৈরি শ্রমিকরা খালি হাতে বিষাক্ত ক্যামিকেল দিয়ে রঙের কাজ করার কারনে বিভিন্ন ধরনের চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। উপজেলায় ৫০ টির অধিক কারখানার মধ্যে নদী সংলগ্ন কুন্ডুপাড়া ও তেবাড়ীয়া গ্রামে রয়েছে ৭/৮ টি। কিন্তু কোনটাতেই নেই বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট।
উপজেলা তাঁতবোর্ড সুত্রে জানা গেছে, উপজেলায় সমিতি ভিত্তিক তাঁতীদের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৯৭৭ জন। তবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাঁতীদের সংখ্যা প্রায় ৩৭ হাজার। যারা শুধু মাত্র কাপড় উৎপাদন করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। তন্মধ্যে বড় একটি অংশ করে সুতা তৈরী এবং রং করার কাজ। আর এই রঙের কাজে হয় এ্যাসিড, কষ্টিকসহ বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত ক্যামিকেল।
কিন্তু কোন ধরনের প্রতিরোধের ব্যবস্থা না নিয়েই এসব বিষাক্ত ক্যামিকেলে খালি হাত দিয়ে ব্যবহার করে এখানকার শ্রমিকরা। এতে বিভিন্ন ধরনের চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। শ্রমিকদের অভিযোগ আর কোন বিকল্প ব্যাবস্থা না থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা এই কাজ করছে বছরের পর বছর।
শুধু যে এখানকার শ্রমিকরাই রোগ আক্রান্ত হচ্ছে তা নয়, কুমারখালীর সবগুলো কারখানার কয়েকহাজার টন ক্যামিকেল মেশানো হয়। সেই মিশানো বিষাক্ত পানি গিয়ে সরাসরি পরছে দেশের একমাত্র মিঠা পানির আধার নামে পরিচিত গড়াই নদীতে। এতে করে দুষিত হচ্ছে গড়াই নদীর পানি। যার ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে জীব বৈচিত্রসহ নানা বয়সের মানুষ।
এবিষয়ে শ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ৩৬ বছর ধরে ভ্যাটের চুলায় সুতায় রঙ লাগানোর কাজ করি। এতে বিষাক্ত ক্যামিক্যাল আছে। তবুও পেটের দায়ে খালি হাতেই কাজ করি। মাঝেমাঝে চর্মরোগ হয়।
আব্দুস সালাম বলেন, যুগযুগ ধরে এভাবেই চলছে। কাজ শেষে গ্লিসারিন দিয়ে ধুঁয়ে নিই। তবে একাজে শরীরে অনেক রোগ হয়।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রায় ৪০ বছর ধরে সুতার কাজ করি। দীর্ঘদিন কাজ করতে করতে অভ্যাস হয়ে গেছে। তবে অনেকেরই ঘা পঁচরা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আকুল উদ্দিন বলেন, এসব ক্যামিকেলের প্রভাবে শ্রমিকদের শুধু চর্ম রোগই নয়, তাদের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই ধরনের কাজ করার সময় সব দিক থেকে সুরক্ষিত থেকে কাজ করতে হবে।
উপজেলা তাঁত বোর্ডের উপ মহাব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান বলেন, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করলে এই সমস্যা থাকবে না। তাঁত বোর্ডের আঙিনায় সরকারি উদ্যেগে একটা মেশিন আনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো ২৭ টি আসবে। অত্যাধুনিক এই ম্যাশিন বসানোর পরিকল্পনা চলছে।
উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি: মো: হাসান আলী
প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ ওবাইদুর রহমান
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: খালিদ সাইফুল
নির্বাহী সম্পাদক: রাশিদুল ইসলাম
নির্বাহী সম্পাদক: মিজানুর রহমান
বার্তা সম্পাদক: আব্দুল কাদের
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: লাল মোহাম্মদ সড়ক, হাটশ হরিপুর নদীরকুল, কুষ্টিয়া-৭০০০।
মোবাইল : ০১৮১৫-৭১৭০৩৪ । ইমেইল : khalidsyful@gmail.com ।
ই-পেপার কপি