কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে অশীতিপর বৃদ্ধা ভিক্ষুকের শেষ আশ্রয়স্থল ৫ কাঠা জমি প্রতারণার মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন করার অভিযোগ উঠেছে। ভিক্ষুকের মেজো মেয়ের ছেলে ইকবাল নামক ব্যক্তি এলাকার কিছু প্রতারক চক্রের মাধ্যমে জমি রেজিস্ট্রি এবং তার বসত ঘর থেকে বের করে দিয়েছে বলে বৃদ্ধা ভিক্ষুকের অভিযোগ।ঘটনাটি ঘটেছে সদকী ইউনিয়নের মঠমালিয়াট গ্রামে। বৃদ্ধা ভিক্ষুকের জমি রেজিস্ট্রির সময় চক্রান্তের সাথে জড়িত তার মেজো মেয়ের ছেলে ইকবাল, জামাই লালন ও মৃত আজিজ মাস্টারের ছেলে পান্না।বৃদ্ধা ভিক্ষুক আম্বিয়া বেগম জানান, ১৯৮৮ সালের দিকে মঠমালিয়াট মৌজার আরএস দাগ নং ২ থেকে আরশেদ আলী ও রহমানের নিকট থেকে সোয়া ছয় কাঠা জমি ক্রয় করেন। সেসময় তার বড় মেয়ে রাবেয়া জমি কেনার মধ্যে টাকা দিলেও পুরো জমি তার নিজের নামে রেজিস্ট্রি করা হয়। সেই থেকে সেখানে বাড়ি করে বসবাস করছিলেন। ৮ বছর পূর্বে তার বড় মেয়ে ঢাকায় গৃহপরিচারিকার কাজে চলে গেলে মেজো মেয়ে রাবেয়া এসে ঐ ঘরে তার সাথে বসবাস করতে থাকে। এবং পরবর্তীতে একই জমিতে উওর /দক্ষিন লম্বা করে তার ঘরের পিছনে ঘর করে বসবাস করতে থাকে। এবং এরপর থেকেই শুরু হয় চক্রান্ত ইকবাল এলাকার প্রতারক চক্রের সাথে আঁতাত করে এবং চক্রের মুলহোতা পান্নাকে দিয়ে তার নানীকে নানাভাবে বোঝাতে থাকে জমি বিক্রি করে দেবার জন্য। একপর্যায়ে বৃদ্ধা ভিক্ষুক জমি বিক্রি করতে রাজি হন তার বসত ঘর ঠিক রেখে সোয়া ৬ কাঠার মধ্যে ৫ কাঠা বিক্রি করার। পান্না বৃদ্ধাকে কথা দেন যেভাবে বলছেন সেভাবে রেজিস্ট্রি হবে। ৬ বছর আগে জমি রেজিষ্ট্রেশনের দিন পান্না ঘটনাস্থলে না পৌঁছালে তিনি বারংবার তার কথা জিজ্ঞেস করেন এসময় লালন ও অন্যান্যরা জানায় পান্না ঢাকা গেছে কোন সমস্যা নাই। তিনি আরো বলেন তিনি অশিক্ষিত কিভাবে জমি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে তিনি কিছুই বুঝতে পারেননি। ২ বছর আগে তার বড় মেয়ের নামে ১ কাঠা জমি রেজিস্ট্রি করতে গিয়ে জানতে পারেন তার বসতঘরের জায়গা সহ রাস্তা সংলগ্ন সমস্ত জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়া হয়েছে । এই নিয়ে এলাকায় শালিসী বৈঠক হলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সিদ্ধান্ত দেন যেভাবে ইকবাল ও তার নানীর ঘর আছে এভাবেই বসবাস করতে হবে। এভাবেই উভয়েই বসবাস করছিলেন কিন্তু তাদের বসতঘর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে গেলে মেরামতের প্রয়োজন দেখা দেয়ায় গত মে মাসের ১০ তারিখের দিকে শালিসি বৈঠকের ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনাসাপেক্ষে ঘর ভেঙে মেরামত করতে গেলে লালন এসে বাধা সৃষ্টি করে এবং মিস্ত্রিদের গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেয়। সেই থেকে তিনি ও তার বড় মেয়ে তালোয়া মাজারের মাদ্রাসায় বসবাস করছেন। শেষ আশ্রয়স্থল হারিয়ে তিনি দিশেহারা।বিষয়ে অত্র এলাকার সাঈদ মৌলানা জানান, বৃদ্ধা ভিক্ষুকের জমি রেজিষ্ট্রেশনের পর থেকেই ইকবালের বোনের স্বামী লালন বিভিন্ন ভাবে বৃদ্ধা ও তার বড় মেয়েকে তাড়িয়ে দেবার জন্য ষড়যন্ত্র করতে থাকে। তিনি বিনা টাকায় ১ শতাংশ জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন বৃদ্ধা ও তার বড় মেয়ের বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় উঠার জন্য। কিন্তু ঘর ভেঙে মেরামত করতে গেলে লালন কোনভাবেই কাজ করতে দিচ্ছেনা।